ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মরদেহ আজ শনিবার নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে তাঁর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ—সহযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিক।
‘আহমদ রফিক ফাউন্ডেশন’ জানিয়েছে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাঁর মরদেহ নেওয়া হবে বারডেম হাসপাতালে। আহমদ রফিকের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর দেহ দান করা হবে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে—চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আহমদ রফিক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একা বসবাস করছিলেন। ২০০৬ সালে স্ত্রীর মৃত্যু হয়, নিঃসন্তান ছিলেন তিনি।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ এই লেখক শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদক। সাহিত্য ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলায় রবীন্দ্রচর্চায় তাঁর অবদান অনন্য; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে দিয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।
জীবনের শেষভাগে তিনি নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০১৯ সালে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেলে অস্ত্রোপচার করা হলেও ফল আশানুরূপ হয়নি। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার পর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যায়। ২০২৩ সাল নাগাদ তিনি প্রায় সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।