বাজারে বাড়তি দামে এলপিজি বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান: জ্বালানি উপদেষ্টা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম

বাজারে বাড়তি দামে এলপিজি বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান: জ্বালানি উপদেষ্টা

দেশের বাজারে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) অতিরিক্ত দামে বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অভিযান চালানো হবে, জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

উপদেষ্টা বলেন, “১২০০ টাকার এলপিজি সিলিন্ডার ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধরনের দায়িত্বহীন ব্যবসা চলতে পারে না। ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম হাজার টাকার কমে থাকা উচিত।তিনি জোর দিয়ে বলেন, ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল হতে হবে এবং অতিরিক্ত মুনাফা করে বিদেশে সম্পদ পাচারের মানসিকতা থেকে বের হতে হবে।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলেবাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ নিরাপত্তাশীর্ষক পলিসি কনক্লেভে তিনি এসব মন্তব্য করেন। কনক্লেভের আয়োজন করেছে দৈনিক বণিক বার্তা, যাতে টেকসই এলপিজি অর্থনীতি গড়ে তোলা, নিরাপত্তা জোরদার এবং পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলার বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, “একশ্রেণির রাজনীতিবিদ তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীরা জ্বালানির সংকট তৈরি করেছে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে, গ্যাস খাতে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অপকর্মের কারণে দেশের বাজারে এলপিজি মূল্যে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি জানান, দেশের জ্বালানি অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) জন্য নতুন রিগ ক্রয় করা হচ্ছে, তবে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এসব কারণে উচ্চ মূল্যে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, এবং এলএনজি রূপান্তরের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন এফএসআরইউ স্থাপন করা হচ্ছে।

বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, জ্বালানি সংকটের জন্য রাজনৈতিক ব্যবসায়ী দোষারোপের কিছু নেই। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে গ্যাসের ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে। এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে কিভাবে এই ঘাটতি পূরণ করা যাবে। জ্বালানি সরবরাহ বাড়িয়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে মাথাপিছু জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে হবে। এজন্য এলপিজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি জানান, প্রতি মাসে ডলারের দর সৌদি আরামকোর বিক্রয় মূল্যের ভিত্তিতে এলপিজি দাম সমন্বয় করা হচ্ছে, যাতে ভোক্তারা কম দামে এলপিজি পান।

কনক্লেভে দেশের জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, গবেষক, উদ্যোক্তা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, বছর দেশে গ্যাস খাতে মোট অগ্নিদুর্ঘটনার সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি, যার মধ্যে ৫৮০টি এলপিজি দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, “এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করে বিইআরসি। সরকারি নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বাজার পরিচালনা করছে। কথায় কথায় লুটেরা বলার কারণে ব্যবসায়ীরা হতোদ্যম হয়ে পড়ছেন।

ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, “উপদেষ্টা হাজার টাকায় এলপিজি দিতে চান। আমদানিকারকরা যদি শতাংশ মুনাফায় সেই দামে বিক্রি করতে পারেন, সেটা করা উচিত।

কনক্লেভে এলপিজি খাতের ভবিষ্যৎ নীতিমালা, নিরাপত্তা মান, বাজার কাঠামো, পরিবেশগত টেকসইতা বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

Link copied!