আজ শনিবার (৭ জুন) সারা বাংলাদেশে ধর্মীয় শ্রদ্ধা ও গভীর ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা।
এই দিনটি আত্মত্যাগ, আত্মশুদ্ধি ও আনন্দের মিলনমেলা। ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুল আজহা স্মরণ করিয়ে দেয় হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও আনুগত্যের মহান দৃষ্টান্ত।
ভোরে দেশের বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে মুসল্লিরা দুই রাকাত ওয়াজিব ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে খতিবগণ খুতবার মাধ্যমে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন।
ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একত্রে নামাজ আদায় ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
নামাজ শেষে সামর্থ্যবান মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করছেন। এই কোরবানির মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় সেই ঐতিহাসিক ঘটনা, যেখানে হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে স্বপ্নে প্রাপ্ত আদেশ অনুযায়ী প্রিয় পুত্রকে কোরবানি করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন।
আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও আনুগত্যের সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি, আর আল্লাহ তাআলা ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি পশু পাঠান কোরবানির জন্য।
ঈদুল আজহার সঙ্গে হজেরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গতকাল হজ পালনকারীরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মুজদালিফা থেকে ফেরা, ও মিনায় কোরবানি সম্পন্নসহ অন্যান্য হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিশ্বের বহু দেশ আজ ঈদ উদযাপন করছে।
বাংলাদেশের শহর, গ্রাম, পাড়া-মহল্লায় আজ সকাল থেকেই কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়ছে। রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মানুষ, মুখে ঈদের আনন্দ। ঘরে ঘরে রান্না হচ্ছে বিশেষ খাবার, পরিবার-প্রতিবেশী মিলে উদযাপন করছেন ঈদের খুশি।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এবার ঈদের ছুটি ১৪ জুন পর্যন্ত— ফলে টানা ১০ দিনের ছুটি পাওয়া গেছে। অনেকেই এই সুযোগে রাজধানী ছেড়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে গেছেন, যার ফলে ঢাকা শহর এখন অনেকটাই ফাঁকা।
ঈদুল আজহা শুধু আনন্দের দিনই নয়, এটি বিশ্বাস, আত্মত্যাগ ও মানবিক সহানুভূতির অনন্য প্রতীক, যা সমাজের সবার মাঝে সমানভাবে ভাগাভাগি করে নেওয়ার শিক্ষা দেয়।