বর্তমান বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৬:৪২ পিএম

বর্তমান বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে: ফখরুল

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

বিচার ব্যবস্থা পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুইদিন আগে ঢাকাবারের সামনে আমাদের আইনজীবীদের ওপর অতর্কিত পুলিশি হামলায় প্রায় ৩০ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আজকে দেখলাম ৬৭ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেছে।  মারল তারা, আর মামলা করল যারা মার খেল তাদের বিরুদ্ধে। সমস্ত বাংলাদেশে এখন এটিই চলছে। মামলায় হাজার হাজার লোকের নাম দেয়, কয়েকজনের নাম উল্লেখ থাকে আর বাকি সব অজ্ঞাতনামা।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানস্থ লেকশোর হোটেলে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট আয়োজিত কারেন্ট স্টেট অব জুডিসিয়ারি: এ টুল টু অপ্রেস অপোজিশান ইন বাংলাদেশ" শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্টের কো-কনভেনর অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে আজকে গণতন্ত্র নেই।  আমরা যে গণতন্ত্রের কথা বলছি, আমরা যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কথা বলছি সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রতো আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না, শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না। আজকে বিচার ব্যবস্থা যদি দলীয়করণ হয়ে যায় পুরোপুরিভাবে, মানুষ কোথায় যাবে? সেজন্যই সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা প্রয়োজন আজকে যে, এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই দাঁড়াতে হবে। শুধু বিচার ব্যবস্থা নয়, আজকে যে রাষ্ট্র কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, সেই রাষ্ট্র কাঠামোটা ভেঙে দিতে হবে।

সংসদে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাসের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, সম্প্রতি পার্লামেন্টে একটি বিল পাস হয়েছে। যেটি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, যেটিকে আপনারা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট হিসেবে চিনেন। এ নতুন আইনের বিষয়ে রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এবং সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক যে সংস্থাগুলো আছে যেমন ইউনাইটেড নেশন থেকে শুরু করে হিউম্যান রাইট কমিশন তারাও বলেছে, এ আইনের বেশ কিছু ধারা পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে। সেখানে সরকার কোনো কিছুই পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র নাম পরিবর্তন করে সংসদে এ বিল পাস করেছে। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে আজকে না আইনের সুরক্ষা আছে, না সংবিধানের সুরক্ষা আছে, না কোড অব কন্ডাক্ট আছে। বিচারকদের বক্তব্যগুলো আজকে আমাদের কি বলে। শুধু যে সংবিধানের সুরক্ষা নেই এমনটি না, এটি পুরোপুরি কোড অব কন্ডাক্ট। এ মুহূর্তে আমার মনে হয় বাংলাদেশের মানুষের মনে একটি প্রশ্ন, দেশের সবচেয়ে বেশি ওয়েপন (অস্ত্র) হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিচার বিভাগকে। এটি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার একটি অস্ত্র।   

ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্টের কনভেনর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দীন খান, সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বক্তব্য রাখেন।

এ সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ইসমাইল জবিউল্লাহ, এসএকে কামরুজ্জামান, জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া, আবদুর রশিদ, বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বদরুজ্জামান বাদল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মীর হেলাল উদ্দিন, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!