নির্বাচনে কারচুপির প্রশ্নই আসে না মন্তব্য করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগই বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারায় ভোটের রাজনীতি ও অধিকার ফিরিয়ে এনেছে।
গেল শুক্রবার ব্রাসেলসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
আগামী বছর ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের শুরুতেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ বিগত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এনে আসন্ন নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সতর্ক করেছে।
বিষয়টি নিয়ে পলিটিকোর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবেন কিনা? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপির প্রশ্নই আসে না।’ এ সময় তিনি যুক্তি দেখান, বাংলাদেশে দীর্ঘ কয়েক বছরের সামরিক শাসনের পর মূলধারার রাজনীতিতে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে তাঁর দলই সংগ্রাম করেছে।
পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে রপ্তানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় মানদণ্ড অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের জাতীয় শ্রম পরিকল্পনা পর্যবেক্ষণ করছে।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়নের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলস সফরে যান। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। ২৫ অক্টোবর সকালে শেখ হাসিনা ইসির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়নের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণসহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইউরোপীয় কমিশন ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি অনুদান চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইসির মধ্যে একটি ১২ মিলিয়ন ইউরোর অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সফরকালে বাংলাদেশ সরকার এবং ইসি বাংলাদেশের সামাজিক খাতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর পাঁচটি ভিন্ন অনুদান চুক্তি স্বাক্ষর করে। একই দিন ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন এবং ভাষণ দেন। বিকেলে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ার্নার হোয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এদিন ইসি কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট জেনেজ লেনারসিক এবং ইসি কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ জুটা উরপিলাইনেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে উরসুলা ভন ডার লেইনের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন।
২৬ অক্টোবর সকালে তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডি ক্রু এবং লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে পৃথক দুটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের সমাপনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন।