আগস্ট ২৩, ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম
এক সপ্তাহে কোনো ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে, সে ওয়ার্ডকে ‘লাল চিহ্নিত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে দিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এখন থেকে সপ্তাহের প্রতি শনিবার করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশককর্মীসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সকল স্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে এবং জনগণের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার ঠেকানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার লক্ষ্যে পরিচালিত কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, "ঢালাওভাবে বলা -- এটা কাজ করছে না, ওটা কাজ করছে না! আমার ফলাফলই তো বলে দিচ্ছে কোনটা কাজ করছে। কীটনাশক যদি কাজ না করত তাহলে এই ভরা মৌসুমে একশ`র নিচে রোগী রাখা -- কোনো দেশই তো পারছে না। যারা এ কথাগুলো বলছেন ওনারা কীটতত্ত্ববিদ নন। ওনারা আসলে বিভিন্ন (ধরনের) কীটনাশক বিক্রি করে ঢাকা সিটি করপোরেশনে চক্র সৃষ্টি করেছিল। (ওনারা) সেই একটি চক্রের (অংশ বিশেষ)।
মেয়র তাপস বলেন, আগামী শনিবার থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক অভিযান শুরু হবে। যেসব ওয়ার্ডে ১০ জনের অধিক ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হবে, সে ওয়ার্ডগুলোকে আমরা বিশেষ ‘লাল চিহ্নিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। সেসব ওয়ার্ডের এলাকাবাসী, সকল হোল্ডিং-স্থাপনার মালিকদের নিজ নিজ বাসাবাড়ি, স্থাপনা, আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দেয়া হবে।
এলাকাবাসীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশককর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এডিস মশার উৎসস্থলগুলোকে ধ্বংস করবেন। নিজেদের জীবন সুরক্ষিত রাখতে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। এর মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
৫, ২২, ৫৩ ও ৬০ নম্বর ওয়ার্ডে আগামী শনিবারে বিশেষ এই পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এই চারটি ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে আমরা ১০ জনেরও বেশি রোগী পেয়েছি। এই চারটি ওয়ার্ডে আগামী শনিবার অভিযান পরিচালনা করব। এরপরে যদি আমরা দেখি যে, অন্য কোনো ওয়ার্ডে বা একাধিক ওয়ার্ডে এক সপ্তাহে দশ জনের বেশি রোগী আসছে, তাহলে আমরা সে ওয়ার্ডগুলোতে পরের শনিবারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এলাকাবাসীর পূর্ণমাত্রায় সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে এডিস মশাকে পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে জানান মেয়র তাপস।
ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী স্থিতিশীল হলেও তা কমানোর পরিকল্পনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এখন ডেঙ্গু রোগের ভরা মৌসুম। এ সময় তা ঊর্ধ্বগামী হওয়ার কথা। কিন্তু আপনারা লক্ষ্য করেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছে- ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগ এখন স্থিতিশীল। আমাদের রোগীর সংখ্যা আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছি। গতকালও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা একশর নিচে ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা এবং সচেতনতা ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে ও নির্মূলে সহায়ক হবে। তাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব, বৃষ্টি হলেও যেন আপনার বাড়ি, আঙ্গিনা ও আশপাশে বৃষ্টির পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’
পরে ঢাদসিক মেয়র সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের অভ্যন্তর ঘুরে দেখেন এবং মশককর্মী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেন।