একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের নানা শ্রেণীর মানুষ লাইন ধরে শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সকালে শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের ঢল।
বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা শ্রদ্ধা জানান
ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন
ফুলেল শ্রদ্ধায় শহীদ মিনারের পাদদেশ
শহীদদের প্রতি ছোটদের শ্রদ্ধা নিবেদন
১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাভাষাকে তারা টার্গেট করে। ১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ও মুসলিম লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা জানান। এরপর ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও জিন্নাত একই কথা বলেন। তবে কথার একটু ব্যবধান ছিলো, সেবার তিনি বলেছেন, “মুখ দিয়ে কেউ চাইলে বাংলা বলতে পারলেও দাপ্তরিক অর্থাৎ সরকারী অফিস আদালতের ভাষা হবে একমাত্র।” এ ধরণের নানা কর্মকান্ডের জন্যই মূলত ভাষা আন্দোলনের উদ্ভব ঘটে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিল বের করেন। মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, সালামসহ নাম না জানা অসংখ্য ভাষাপ্রেমী। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালে।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।
আরও পড়তে পারেন-