ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩, ০৪:০১ পিএম
ভাষা নিয়ে গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২৩ পেলেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান। বেদে জনগোষ্ঠীদের বিলুপ্তপ্রায় মাতৃভাষা ‘ঠার’ ভাষা সংগ্রহে অবদান রাখায় এ পদক পেলেন তিনি। এই ভাষাটির নেই কোনো বর্ণ বা লিপি। মূলত এটি কথ্য ভাষা। যা সাধারণ মানুষের বোধগম্যের বাইরে।
মঙ্গলবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক তুলে দেন।
এছাড়া আরও পদক পান গবেষক ড. রনজিত সিংহ, ভারতের ড. মাহেন্দ্র কুমার মিশ্র এবং কানাডার ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভারস অ্যাসোসিয়েশন।
ভাষা বিজ্ঞানীদের মতে, ১৬৩৮ সালে শরণার্থী আরাকানরাজ বলালরাজের সঙ্গে মনতং জাতির যে ক্ষুদ্র অংশ বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের ভাষার নাম ‘ঠার’ বা ‘ঠেট’ বা ‘থেক’ ভাষা। সেই রহস্যময় ‘ঠার’ ভাষা নিয়ে আট বছরের গবেষণালব্ধ পূর্ণাঙ্গ বই ‘ঠার বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশ পায় গত বছর। আর বছর না ঘুরতেই সেই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক ২০২৩।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকটি প্রবর্তন করে।বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২১ সাল হতে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক প্রদান শুরু হয়। ২০২১ সাল হতে প্রতি দুইবছর পরপর এই পদক প্রদান করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে হাবিবুর রহমান তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও দুইবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন। তাছাড়া সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, বেদে সম্প্রদায় ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে নিয়ে তার কাজ সব মহলে প্রশংসিত।
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি হাবিবুর রহমান সম্পাদনা করেছেন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যৌনপল্লীর শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়ানো, একাত্তরে পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে পুলিশের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের খুঁজে বের করা, তাদের নিয়ে বই সম্পাদনা-এসব কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে। বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এই পুলিশ কর্মকর্তা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন। পেশাগত সাফল্য তাকে নিয়ে গেছে ঈর্ষণীয় অবস্থানে।