আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২, ২০২৩, ০২:৫০ পিএম

আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা: প্রধানমন্ত্রী

দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করাই এখন লক্ষ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাধারণত অন্যান্য নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার দেখাশোনা করেন। আমাকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা তার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নেয়ায় আমি তা করতে পেরেছি।’

রবিবার (২ জুলাই) সকালে টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সব জায়গায় আমি ঘুরেছি। মাইলের পর মাইল কাদামাটি মাড়িয়েছি। নৌকা, সাম্পান, ট্রলার, ডিঙি নৌকা, ভ্যান কোনটায় চড়ি নাই? সবকিছুতে আমার চড়া আছে। এভাবে বাংলাদেশ ঘুরেছি, বাংলাদেশ দেখেছি। আর সেইটা বুঝে উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এখন বাংলাদেশকে আমরা একটা জায়গায় নিয়ে এসেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে ছয় বছরের নির্বাসন থেকে দেশে ফেরার পর আমি এমনভাবে দেশ ভ্রমণ করেছি এবং সারা দেশে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে এসেছি।‍’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ‍‍‘মাই হাউস, মাই ফার্ম‍‍’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‍‍‘মাই ভিলেজ, মাই টাউন‍‍’ বাস্তবায়ন এবং শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন যার জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে তাঁর পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা এবং একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।

মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা শুনতে চান।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া সফরের অংশ হিসেবে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে গাড়িতে করে তিন ঘণ্টায় পদ্মা সেতু পার হয়ে গতকাল (১ জুলাই) সকাল ১১টা ২৭ মিনিটের দিকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা ও একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর সাথে রয়েছেন।

টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে বাড়তি বিপুল উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ যোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পুরো গোপালগঞ্জকে রঙিন পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সাজানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিম, বকুল এবং আমের চারা রোপণ করেন। এছাড়াও নবনির্মিত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পরে কোটালীপাড়া উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কোটালীপাড়া উপজেলার জনসাধারণের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকেলে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ফাতেহা পাঠ করেন । তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে মোনাজাতে যোগ দেন। শনিবার রাত টুঙ্গিপাড়ায় কাটান প্রধানমন্ত্রী। আজ (২ জুলাই) বিকেলে তার টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

Link copied!