মার্চ ৪, ২০২৩, ০৯:১৬ এএম
পঞ্চগড় জেলার আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর কাদিয়ানীদের জলসা বন্ধের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার পর পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে জলসা বন্ধের এ নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে গভীর রাতে দুইজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পঞ্চগড় পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম সিরাজুল হুদা।
শনিবার সকালে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে তিনি বলেন, “নিহতদের মধ্যে একজন বিক্ষোভকারী আরিফুর রহমান আরিফ(৩০)। তিনি পঞ্চগড়ের মহিলা কলেজ রোড এলাকার ফরমান আলীর ছেলে। আরিফ ইসলামী ছাত্র শিবির কর্মী বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে মুসল্লিদের ছোড়া ইটপাটকেলে আঘাত পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত অপরজন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নাটোর জেলার বাসিন্দা জাহিদ হাসান (২২)।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন মসজিদ থেকে বেরিয়ে লোকজন চৌরঙ্গী মোড়ে সমবেত হয়ে মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাথে বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা যোগ দেন। কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়েন তাঁরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে তেঁতুলিয়া-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পঞ্চগড় শাখাসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। পরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, শুক্রবারের মিছিলের বিষয়ে তাঁদের কোনো নির্দেশনা ছিল না। কারা মিছিল বের করেছেন, তা তাঁদের জানা নেই। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসার মিডিয়া সেলে কর্মরত মাহমুদ আহমাদ বলেন, বিকেল থেকেই হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তাঁদের অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে হামলা করে অনেককে আহত করা হয়েছে।
রাত পৌনে আটটার দিকে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধ করার জন্য তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা জলসা বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়া আশ্বাস দিয়েছেন।