ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩, ১২:৩৭ এএম
‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহনের কোনো সুযোগ নেই। দণ্ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সশরীরে রাজনীতি করতে পারবেন না।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় মহিলা সংস্থায় দু'টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এ কথা বলেছেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একটা দলের চেয়ারপার্সন। তিনি রাজনীতি করতে পারেন সেক্ষেত্রে তো কোনো বাধা নেই। রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন কারণে জেলে যেতে পারেন। জেলখানা থেকেও দলের রাজনীতি পরিচালনা করতে পারেন। কিন্তু যখন দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ হয়, তখন সরাসরি রাজনীতি করার সুযোগ হয় না। দণ্ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত সশরীরে রাজনীতি করার সুযোগ নেই।
হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আমাদের আইন অনুযায়ী, সংবিধান অনুযায়ী একজন দণ্ডপ্রাপ্ত যার দু বছরের সাজা রয়েছে, তার সাজা শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।
খালেদা জিয়া দলের কার্যালয়ে যেতে পারবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, তিনি তো জামিনে নেই। বাসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ক্ষমতাবলে অনুগ্রহে, অনুকম্পায় চিকিৎসার জন্য বাসায় আছেন।
হানিফ আরও বলেন, বিএনপি ২০১৩ সাল থেকে সরকার পতনের আন্দোলন করে যাচ্ছে। আগে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে করেছে, এখন লণ্ডনে পলাতক তারেক রহমানের নেতৃত্বে করছে। প্রতিবছরই তারা এই আন্দোলন হবে, ঈদের পরে হবে, সরকার পতন হবে এমন কথা বলে আন্দোলন করে। এইসব কথা বলে তারা কোনোরকমে কর্মীদের উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করে।
হানিফ বলেন, আমরা বহুবার বলেছি, বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের শক্তি নেই আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাবে। কারণ আওয়ামী লীগ এদেশের প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে— এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপিকে আন্দোলন আন্দোলন খেলা বন্ধ করে নির্বাচন অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী নির্বাচনে জন্য অংশ নিলে বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকবে, আর যদি অংশ না নেয় তাহলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
এর আগে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা উন্নয়নে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। চরম দারিদ্রের দেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে আমাদের দরকার দক্ষ মানবসম্পদ।
তিনি বলেন, সরকার স্কিলড ম্যানপাওয়ার তৈরির কাজ শুরু করেছে। কিন্তু শুধু স্কিলড ম্যানপাওয়ার দিয়ে টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব না। আমাদের সমাজে বর্তমানে সবচেয়ে বড় যে ঘাটতি সেটা হলো মূল্যবোধ ও সততার চরম ঘাটতি। মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন, সৎ মানুষ না গড়তে পারলে টেকসই উন্নয়ন হবে না। শেখ হাসিনা অনেক বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। দায়িত্বভার শেখ হাসিনার হাতে না থাকলে দেশ মুখ থুবড়ে পড়বে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ধাপে ধাপে অর্জিত হয়েছে, হুট করে আসেনি। স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে আমরা সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প কেবল শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আলোকিত বাংলাদেশ আজ বিশ্বে প্রশংসিত।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ও বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রেবেকা সুলতানা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সাহিত্যিক ফেরদৌসী রুবীর লেখা 'কম্পাস' ও 'ল্যাম্পপোস্ট' বই দু'টির মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।