মে ১৫, ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে নেই বিএনপির কোনো প্রার্থী। দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়ে কোণঠাঁসা হয়ে পড়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর মনোনয়নপত্র ইতিমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু তাঁর মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বৈধ বলে জানিয়েছে আদালত।
স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ঋণখেলাপি ছিলেন বলে জানায় হাইকোর্ট। তাই আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বৈধ বলার সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আদালত। ফলে এই সিটির নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তিনি গণসংযোগও শুরু করেছেন।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রচারে নেমে গেছেন মেয়র পদপ্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানও।
এই সিটির নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় জাপা প্রার্থীর সাথে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম, কেন্দ্রীয়, মহানগরের নেতারাও। মনোনয়ন জমা দিয়েই এমএম নিয়াজ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি গাজীপুরকে একটি পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আশা করি জনগণের বিপুল ভোটে আমি নির্বাচনে জয় লাভ করব।
নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শক্ত অবস্থানে থাকলেও এই দলেরই এখন তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোটের মাঠে। এটি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। এদিকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে কোনো উদ্যোগ নেবে না বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় ৩০ নেতা-কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে বিএনপি।
সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান বলেন, মহানগর এবং থানা পর্যায়ে বিএনপি এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের অনেক দায়িত্বশীল নেতারা এখানে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে কমিটির প্রধান করে মির্জা আজমকে সমন্বয়ক ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে উপদেষ্টা করে করা হয়েছে ওই কমিটি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে গাজীপুরসহ অন্য সিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেয় বিএনপি। ২০১৮ সালের অভিজ্ঞতা থেকে তারা এ সরকারের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে দলীয়ভাবে না গেলেও বিএনপির অনেকে বহিষ্কার হওয়ার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করে থাকেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম প্রমুখ।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন এবং নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন।
এ নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, তিন হাজার ৪৯৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ছয় হাজার ৯৯৪ জন পোলিং অফিসারসহ ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা থাকবেন।