আগস্ট ১৪, ২০২২, ০৪:২৪ পিএম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাবেক ছাত্রলীগের ব্যানারে আলোচনা ও দোয়া আয়োজনের যাঁরা প্রতিবাদ করেছে তাঁরা কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী নয়, বরং জামাত-শিবির এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানে জাতির পিতা এই বাংলাদেশের জন্য কী। সুতরাং জামাত-শিবিরের প্রেতাত্মারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার এখতিয়ার কারও নাই। বুয়েট প্রশাসনকে আবারও বিবেচনা করতে বলবো, ছাত্র রাজনীতি সচল করে বুয়েটকে জঙ্গিমুক্ত করতে আপনারা পদক্ষেপ নেবেন।'
রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাষ্কর্যের সামনে এক মানবন্ধনে এই আহ্বান জানান তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবিতে ঢাবি ছাত্রলীগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বুয়েট প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে আপনারা কী বোঝাতে চান? ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে আপনারা কি বুয়েটকে জঙ্গিমুক্ত করতে পারবেন? আপনাদের জন্য অশনি সঙ্কেত। এই বিষয়ে আপনাদের এখনই সচেতন হওয়া উচিত।’
আল নাহিয়ান জয় বলেন, ‘তারা কারা যারা স্লোগান দেয়, ছাত্রলীগের ঠিকানা, বুয়েট ক্যাম্পাসে হবে না- এত সহজ! এটা এত সহজ না। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ইঞ্চিতে ছাত্রলীগের ইতিহাস রয়েছে। ছাত্রলীগকে যারা ঠিকানা মনে করেন না তাদের উদ্দেশ্য আমরা বুঝে গিয়েছি। তাদের উদ্দেশ্য হলো বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর কাঁঠাল ভেঙ্গে মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায়ের প্রতি উদ্ভুদ্ধ করা।’
বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনাদের পাশে আমরা আছি। কুচক্রী শিবিরদের আপনারা প্রতিহত করবেন। আপানদের প্রতি অনুরোধ, আপনাদের কেউ যেন ওই দুষ্কৃতকারী বাটপারদের কথা শুনে আন্দোলনে না নামেন। যারা ছাত্রলীগকে নিয়ে এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছে তাদের বিচার হবে৷’
এ সময় তিনি প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর শোক সভা বানচাল করার জন্য প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছ তাদেরকে আপনারা খুঁজে বের করুন। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হওয়া উচিত। কারণ তারা সংবিধান লঙ্ঘন করার মত কাজ করেছে।’
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘গতকাল রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে আমরা হিজবুত তাহরীর, শিবির এবং জঙ্গিবাদীচক্রের যে তাণ্ডব দেখতে পেয়েছি সেটির প্রতি ধিক্কার জানাই। এই ঘটনায় বুয়েট প্রশাসনের নীরবতা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। তারাই নাকি বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী।’
বুয়েট প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগসহ যে সব বামসংগঠন প্রগতীশীলতার রাজনীতি করে তাদের নিষিদ্ধ করে আপনারা জঙ্গিবাদী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছেন। বাংলাদেশের কোথাও পাকিস্তানি রাজনীতির চর্চা করতে দেয়া হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এটি মেনে নেবে না। আপনারা দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি সজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুস, হাজী মুহাম্মদ মহসিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেনসহ বিভিন্ন হলের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।