অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় আগামী ১৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিনের মেয়াদ।
রবিবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল এই আদেশ দেন।
আদালতে সম্রাট হাজির ছিলেন। তাঁর পক্ষে আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ পারভিন হীরা জামিন স্থায়ী করার আবেদন জানালে আদালত জামিন বর্ধিত করেন। অন্যদিকে সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক শুনানি পিছিয়ে দেন।
এ নিয়ে ১১ বারের মতো অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হলো। গত ২১ জুন, ৬ জুলাই, ১১ আগস্ট, ২২ আগস্ট, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০ অক্টোবর, ৮ নভেম্বর, ১১ ডিসেম্বর, ৩০ জানুয়ারি ও ১ মার্চ অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি হয়নি।
এদিকে সম্রাটের পাসপোর্ট সম্রাটের জিম্মায় দেওয়ার জন্য আবেদন আগামী ধার্য তারিখে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। সম্রাট গুরুতর অসুস্থ বিবেচনায় পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার শর্তে গত বছরের ২২ আগস্ট জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন এবং বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে তার ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাঁকে নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরদিন র্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। সেই সব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। পরে সিআইডি অর্থ পাচারের অভিযোগে এবং দুদক জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আরও দুটি মামলা করে।
মাদক, অর্থ পাচার ও অস্ত্র আইনে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সম্রাটকে ঢাকার তিনটি পৃথক আদালত আগেই জামিন দিয়েছেন।