বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ সোমবার। ‘সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার: শিশু শ্রমের অবসান ঘটান` প্রতিপাদ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। শিশু শ্রমের কারণে শিশুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরর উদ্দেশ্য নিয়েই ২০০২ সালে সর্বপ্রথম দিবসটি পালন করে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)।
দিনটি উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী শিশু ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে অনুষ্ঠান, টিভিসি প্রচার করছে। সারা দেশে কলকারখানা ও শ্রমঘন এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার টাঙানো হয়েছে। শিশুশ্রম নিরসনে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটনা কারণে শিশুদের কায়িক শ্রমের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পাশাপাশি শিশুশ্রমের কুফল সম্পর্কে অসচেতনতায় দিনদিন শিশুশ্রম বাড়ছে।
বাংলাদেশে শিশুশ্রম বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। স্কুলগামী শিশুদের নগদ অর্থ,খাবারসহ নানা ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে সব ধরনের শিশুশ্রম থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ’ কাজ করছে। সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শিশুশ্রম সমীক্ষা-২০০৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩২ লাখ। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ২০২৩ সালে শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুযায়ী, শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ১৭ লাখে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশুদের উন্নয়ন ও বিকাশে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন। তিনি সংবিধানে শিশু অধিকার সমুন্নত রাখেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০’ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া শিশুদের উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় শিশু নীতি-২০১১’, ‘শিশু আইন-২০১৩’, ‘বাল্যবিবাহ বিরোধ আইন-২০১৭’ এবং গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে।