জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৩:৫২ এএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশে গুম-খুন করা হচ্ছে। এখানে ভালো কিছু হচ্ছে না। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা আসবে সেটাই স্বাভাবিক। নিষেধাজ্ঞা ঠেকানো দূতাবাসের কাজ নয়।”
রবিবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা নিয়ে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের এ সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
২০২১ সালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আবারো একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এমন আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। ওই চিঠিতে রাষ্ট্রদূতদের জন্য ২০২৩ সালে করণীয়-সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে ৭টি বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে । তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিষেধাজ্ঞার বিষয়। ‘একতরফা নিষেধাজ্ঞার’ মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে রাষ্ট্রদূতদের বলা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসকে সতর্ক থাকার বিষয়ে ওই সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “দেশের যে অবস্থা তাতে নিষেধাজ্ঞা আসবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এখানে ভালো কিছু হচ্ছে না। গুম খুন করা হচ্ছে। দূতাবাসের কাজ হলো জনগণের পক্ষে কাজ করা। নিষেধাজ্ঞা ঠেকানোর কাজ তাদের না।”
সভায় বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “বর্তমান সরকারের হাত থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে একটা ট্র্যাকে আসতে হবে। সেজন্যই তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, যারা শিক্ষিত ও দক্ষ, অভিজ্ঞ তাদের সমন্বয়ে উচ্চ কক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে করে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হবে।”
তারেক রহমান ঘোষিত ২৭ দফা রুপরেখা বাস্তবায়ন না হলে দেশ সঠিক পথে চলবে না মন্তব্য করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, “দেশ ও জনগণের স্বার্থে এই ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে স্মার্ট বাংলাদেশের নামে স্মার্ট ভোট চুরি, শেয়ারবাজার লুট হবে। ১০ লাখ কোটি টাকার মতো বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নেই।”
ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী।