অক্টোবর ৪, ২০২১, ০৬:২৮ পিএম
নেপালের শীর্ষ ধনী বিনোদ চৌধুরী ও তার প্রতিষ্ঠান চৌধুরী গ্রুপের (সিজি) নাম এসেছে প্যানডোরা পেপার্সে। তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিদেশির নামও প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের আব্দুল আউয়াল মিন্টুর নামও রয়েছে। তার পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। নেপালি টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য দাবি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক জোট আইসিআইজে ফাঁস করেছে এই তথ্য। এসব তথ্যের নাম দেওয়া হয়েছে প্যানডোরা পেপার্স। বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা, রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ এবং লেনদেনের তথ্য ফাঁস হয়েছে।
আইসিআইজে ও নেপালের সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেপাল (সিআইজে-এন)এর তদন্তের প্রতিবেদনে বিনোদ চৌধুরীর পরিবারের আরও চারজন সদস্যের নাম আছে, সেইসঙ্গে আছে দেশটির সবচেয়ে পুরনো ব্যবসায়িক পরিবার গোলচা অরগানাইজেশন এবং ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রভাবশালী আরও কিছু মানুষের নাম। তদন্তে উঠে এসেছে, এসব নেপালী কোম্পানিগুলো ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে (বিভিআই) নিজ পরিবারের সদস্য ও পরিচিতদের নামে কোম্পানির নিবন্ধন করিয়ে শেল কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করতো।
সিআইজে-এন এর ফাঁস করা নথিতে বিভিআই, সাইপ্রাস, মরিশাস, সিঙ্গাপুরের মতো কর স্বর্গ হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে শেল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা, কোম্পানিটির সঙ্গে পার্টনারদের গোপনে শেয়ার কেনা-বেচা, অন্যান্য অর্থ লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। এরমধ্যে কিছু পাকিস্তানি, সিঙ্গাপুরিয়ান, শ্রীলঙ্কান ও বাংলাদেশির নামও আছে বলে জানা গেছে নেপাল টাইমসের প্রতিবেদন থেকে।
বিনোদ চৌধুরী বিভিআই-তে তার স্ত্রী ও তিন ছেলের নামে কোম্পানি খুলেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চৌধুরী পরিবার বিভিআই-তে সিনোভেশন ইনকরপোরেটেড, সিজি হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড, সেনসেই ক্যাপিটাল পার্টনারস ইঙ্ক এবং সিঙ্গাপুরে সিজি হসপিটালিটি হোল্ডিংস ও গ্লোবাল পিটিই লি. এই কোম্পানিগুলো খুলেছে।
বিভিআই-তে চৌধুরী গ্রুপের সিনোভেশন কোম্পানির নিবন্ধনে জড়িতদের নামের মধ্যে আছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর নাম। ২০১৮ সালে প্রকৃত তথ্য গোপন করে একাধিক ভুয়া অডিট রিপোর্ট তৈরি করে ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জমা দিয়ে ঋণ গ্রহণ, রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আত্মসাৎ, বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তার সহযোগিতায় সন্দেহজনক লেনদেন ও বিদেশে অর্থ পাচার, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করে।
বিনোদ চৌধুরীর ছেলে রাহুল চৌধুরী বলছেন, তারা দেশের বা কোনো আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেননি।
"সিজি বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে পার্টনারশিপে আছে, এর সব তথ্য পাবলিক ডোমেইনেই পাওয়া যাবে। আমাদের ব্যবসায়িক পার্টনারদের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইনা,’
তবে এ তদন্ত প্রতিবেদন দেখে নেপালের সাবেক অর্থমন্ত্রী রামেশ্বর খানাল বলছেন অন্য কথা। তার মতে, কোম্পানিটি যেভাবে দেশের বাইরে অর্থ নিয়েছে, তা দেশের আইনে অনুমোদিত নয়।
সূত্র: নেপাল টাইমস, এএনআই।