আগস্ট ৯, ২০২১, ০২:২৬ পিএম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক পরিবার দেশ গঠনে এত আত্মত্যাগ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও বৃক্ষরোপণ শেষে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক পরিবার নেই, যারা দেশ গঠনে এত বড় আত্মত্যাগ করেছে। অথচ জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া এ পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুজব রটিয়েছে। জিয়ার প্রথম কাজই ছিল চরিত্র হনন করা। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় যেন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তার জন্য কত ষড়যন্ত্র, প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করা হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে গুজব ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যাপক পারদর্শিতা দেখিয়েছে। যার খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এ কারণে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারতম হয়েছিল। দারিদ্র্যে জর্জরিত হয়েছিল। এই দারিদ্র্য বিক্রি করে অনেকে পদক পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। গুটিকয়েক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত মন্তব্য করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা। পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কোলে ঠেলে দিয়ে, ইতিহাসকে বিকৃত করে বাংলাদেশকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে। মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩০/৩৫ বছর আগেই আমরা স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেতাম। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল।
বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামলকে উন্নয়নের বিস্ময় আখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই সাড়ে তিনবছর সময়কালকে স্বাধীনতাবিরোধীরা সব সময় কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের সেই সাড়ে তিনবছরের সময়ের গবেষণায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোন শাসনতন্ত্র ছিলনা। রক্তাক্ত বাংলাদেশ। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নাই। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে শাসনতন্ত্র দিয়েছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই সমুদ্র আইন ও স্থল সীমান্ত আইন করে দিয়ে গেছেন। সীমানা নির্ধারণে পৃথিবীর দেশে দেশে কত রক্তপাত হচ্ছে। একটি বুলেট খরচ করা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আইনে দেশরত্ন শেখ হাসিনা সীমান্ত বাংলাদেশের নির্ধারণ করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের কোন ভুল নেই। সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনের কাতালিয়ানরা স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তাদের নেতা পালিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু পালিয়ে যান নাই। পালিয়ে গেলে দেশ স্বাধীন হতোনা।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা ছিলনা। জেলখানায় নিরাপত্তা নাই, প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা। তখন আইনের শাসন ছিলনা; বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানরা নিজেদের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এরকম একটা জায়গা থেকে গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁছাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী এখন আন্তর্জাতিক নেত্রী- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে আঞ্চলিক না; আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন। কীভাবে ১৮/২০ কোটি মানুষকে এত ছোট জায়গায় আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন! অনেক বড় বড় ধনী দেশ এ করোনার সময়ে যারা তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হয়নি। এ নেতৃত্বই আমাদের স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছাবে।
বিআইডাব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে নৌ পরিবহন সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।