রাজধানীতে জলাবদ্ধতার বড় যে কারণ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ১৪, ২০২১, ১২:৪০ এএম

রাজধানীতে জলাবদ্ধতার বড় যে কারণ

মগবাজার থেকে বাংলামটর। এই পথে নির্মাণাধীন আকাশচুম্বী বড় ভবনের সংখ্যা ছয়টির বেশি। প্রতিটি ভবনের সামনেই ফুটপাথ জুড়ে রয়েছে ইট, বালু অথবা রড। কিছু ক্ষেত্রে ফুটপাথ ছাড়িয়ে মূল সড়কেও উঠে এসেছে নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণাধীন এই ভবনগুলোর পার্শ্ববর্তী সুয়ারেজ লাইনে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে জমা হচ্ছে বালু ও সুড়কি। আর এভাবেই দিনের পর দিন পরে থাকা ময়লা অন্যান্য পলিথিন ও ময়লার সঙ্গে মিশে বন্ধ করে ফলছে পানি নিষ্কাশন পথগুলো।

শুধু বাংলামটর নয়, রাজধানীর ছোট-বড় রাস্তা থেকে শুরু করে প্রধান সড়কের বেশি কিছু ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায় নির্মাণ সামগ্রী। বিভিন্ন জায়গায় বালু সিমেন্টের কাজ করে ফুটপাত দখল করে। এতে পথে চলতে অসুবিধা হয় সাধারণ মানুষের। শুধু সাধারণ মানুষের চলাচলে নয়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও এর জন্য নানা অসুবিধা পোহাতে হয়।

Road

যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী রাখছে ভবন মালিকরা।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সরজমিনে দেখা গেছে ফুটপাতের জায়গা দখল করে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ চালাচ্ছে কোম্পানী গুলো। সারা, আকাঙ্খা, কনকর্ড ও সাউথ এশিয়ানসহ বিভিন্ন বিল্ডার্স কোম্পানির সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। সেই সঙ্গে ফুটপাতের অর্ধেক জায়গা দখল করে চলছে নির্মান কার্যক্রম। শুধু তাই নয়, কিছুটা দূরবর্তী ডাস্টবিনে নিয়ে নির্মাণ সামগ্রীতে ব্যবহৃত পন্যের অবশিষ্টাংশ না ফেলে তা ফেলে রাখা হচ্ছে ফুটপাথ বা সুয়ারেজের খুলে থাকা ঢাকনার ভেতরে।

এ অনিয়ম গুলোর কথা স্বীকার করেছে রিহ্যাব স্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন। এ বিষয়ে রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল দ্য রির্পোটকে বলেন, ’আমরা এর আগেও এ বিষয়ে নিয়ে কোম্পানিগুলোর সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে রাস্তা বা ফুটপাতকে দখল করে কোন ধরনের কার্যক্রম তারা চালাবেন না। কিন্তু আমরা দেখতে পারছি তারা তাদের কথা রাখেনি। ডিএনসিসি ও রাজউকের সহায়তায় আমরা একটি গাইডলাইন তৈরির ব্যবস্থা করছি। গাডলাইন তৈরি হয়ে গেলে দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

Road 2

ডিএনসিসির এক জরিপে দেখা গেছে, মোট বর্জ্যের অন্তত ১০ শতাংশই নির্মাণ সামগ্রীর। আর এসব সামগ্রী রাস্তা বা ফুটপাতে রাখার কারণে বৃষ্টির সময় ড্রেনে গিয়ে ব্লক তৈরি করছে। এর ফলে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ ছাড়াও বেশিরভাগ নির্মাণাধীন ভবনেই পাওয়া যাচ্ছে এডিস মশার লার্ভা। এ বিষয়ে রিহ্যাবকে সতর্কও করেছে নগর কর্তৃপক্ষ।

উত্তর নগরের দাবি, বিল্ডার্স কোম্পানিগুলো কাজের অযুহাত দিয়ে রাস্তার সমস্যা তৈরি করছে। এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা দ্য রির্পোটকে বলেন, ’ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে নির্মানাধীন ভবনের কোম্পানিগুলো যখন কাজ করে থাকে তখন রাস্তাগুলো নষ্ট হয়। আমরা কিছুদিন আগেই রিহ্যাবের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে অনুরোধ করেছি তারা যেনো দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া আমরাও নির্মানাধীন ভবন তৈরির ক্ষেত্রে যারা এ ধরনের অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধন্ত গ্রহণ করেছি’।

ডিএনসিসি ও রিহ্যাবের পক্ষ থেকে গাইড লাইন তৈরির জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে ডিএনসিসি তিনজন এবং রিহ্যাবের দুইজন সদস্য আছেন। ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এই গাইড লাইন তৈরি হবে বলে জানান উত্তর সিটি কর্পোরেশন।

Link copied!