দেশে বিকৃত অবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে বিকৃত অবস্থা বিরাজ করছে। এজন্য আওয়ামী লীগের সবার আগে বিচার হবে। তারা বিকলাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সংবিধান শেষ করে দিয়েছে।’
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার প্রণীত ‘জাতিসত্ত্বার অন্তরালে বিষাক্ত নিঃশ্বাস’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন,বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, আবদুস সালাম।
অনুষ্ঠানে জাতিসত্ত্বা নিয়ে বিতর্ক অনেকদিন ধরে চলছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙালি জাতি কথাটা বলায় অনেকে বাদ পড়ে যায়, যারা বাঙালি না তারা বাদ পড়ে যান। শহীদ জিয়াউর রহমান প্রথম বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ নিয়ে আসেন।’
সংসদ, বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনকে দলীয়করণসহ গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগের চরিত্রের পুরোনো ইতিহাস। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত একইভাবে তার দেশ পরিচালনা করেছে। শেষ পর্যন্ত ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করেছে।’
এসময় বিএনপির অন্যতম শীর্ষ এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা এটা এড়িয়ে যান। তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন? এটা (বাকশাল) জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেন না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বাকশাল করা হয়েছিলো, কেন? কারণ কেউ বলতে পারবে না, কেউ লিখতে পারবে না। শুধু তারাই বলবেন। একনেতা এক দেশ, শেখ মুজিবের বাংলাদেশ- এটাই ছিলো তখনকার স্লোগান। এখন কী, একনেতা এক দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ; তফাতটা তো নাই। নেই, খালি মোড়কটা আলাদা। এই যে আমরা মোড়ক উন্মোচন করলাম— এমন। গণতন্ত্রের নামে ভেতরে কিন্তু একদলীয় শাসনব্যবস্থা- বাকশাল।’
বর্তমান সরকারকে অবৈধ, জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘ এরা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন। আমরা এ নির্বাচন মানি না। এদেশের মালিক জনগণ, তারা একটি দিন পায়- যে দিনে তারা নিজেদের কথাটা, অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সেটা হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। আওয়ামী লীগ সেই অধিকারটাও কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।
স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সেখানেও দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ছাড়া কিছু নাই। আর কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। এমপি ঘোষণা দিচ্ছেন এখানে কোনো নির্বাচন হবে না। একজন চেয়ারম্যান থাকবেন, বাকিরা যাদের আমি সিলেক্ট করে দেবো তারাই হবেন সদস্য। তারপরও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয় না। এটা তো রাষ্ট্রবিরোধী কথা।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও উন্নতির দিকে জানিয়ে সবার কাছে দোয়া কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।