চট্টগ্রামে জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে দুই মামলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ২৬, ২০২১, ০৭:৪৬ পিএম

চট্টগ্রামে জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে দুই মামলা

চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আমির ও বর্তমান আহ্বায়ক জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ দুটি মামলা করা হয়।

নতুন এ দুই মামলাসহ ওই সহিংসতার ঘটনায় এপর্যন্ত মোট তিনটি মামলা করা হলো। এসব মামলায় স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতসহ হেফাজতের প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল উদ্দিন, উপজেলা জামায়াতের আমিরসহ হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা।

গত বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) হাটহাজারী থানায় নতুন দুটি মামলা দায়ের করা হয়। তবে আজ সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়। এদিন এ মামলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

গত ২৬ মার্চের ঘটনায় এত দেরিতে কেন মামলা হয়েছে- জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ওসি বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে। এছাড়া নাম-ঠিকানা যাচাই করতে আমরা সময় নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য সময় নেয়া হয়েছে। আর নিরীহ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, তাই যাচাই করে প্রকৃত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়,  গত বৃহস্পতিবারের নতুন দুই মামলায় জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ৩ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কনস্টেবল মো. সোলায়মান একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় জুনায়েদ বাবুনগরী, হেফাজত নেতা মীর ইদ্রিস, নাছির উদ্দিন, জাকারিয়া নোমান, আহসান উল্লাহসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে রাখা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে হাটহাজারী সদর, ইছাপুর বাজারে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও রাস্তায় দেয়াল দিয়ে আসামিরা অস্থিরতা সৃষ্টি করেন। আসামিরা ২৬ থেকে ২৮ মার্চ রাস্তায় দেয়াল নির্মাণ, থানা ও ভূমি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ পুলিশের ওপর হামলা করেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। প্রতিবাদে হাটহাজারীতে মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে চারজন নিহত হন।

চারজন নিহত হওয়ার জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা হাটহাজারী ও পটিয়া থানা ভবন, হাটহাজারী ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সদর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। সরকারি হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯২ লাখ টাকা।

ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় সাতটি, পটিয়া থানায় একটিসহ আটটি মামলা হয় ঘটনার চারদিন পর। আর এসব ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।

Link copied!