নভেম্বর ২৮, ২০২১, ০৫:৪৫ এএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোরআন-হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বাস্তবায়ন করেন নাই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। হেফাজতের আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আইন বিভাগের হাতে রয়েছে বলেও তিনি জানান।
শনিবার(২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আল্লাহ, রাসুল, কোরআন-সুন্নাহ ও ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন পাস করার দাবিতে সংগঠনটি এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংগঠনের সভাপতি শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপিতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদি, সংগঠনটির নায়েবে আমির সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম।
‘শেখ হাসিনা একজন পাকা মুসলিম’ মন্তব্য করে সম্মেলনে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ তিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন; তাহাজ্জুদ আর কোরআন পড়ে তাঁর দিন শুরু হয়। তাঁর শাসনামলে তিনি এ দেশে কোরআন-হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বাস্তবায়ন করেন নাই। এমন কোনো আইন তিনি করবেনও না—এটা তাঁর ওয়াদা।”
এ দেশে কোরআন-সুন্নাহর বাইরে কোনো অঘটন ঘটলে সরকার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেয় জানিয়ে হেফাজতে নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যাঁরা নির্দোষ, তাঁদের দ্রুত জামিনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” এসময় ভবিষ্যতে হেফাজতের কর্মসূচিগুলোতে যেন অনুপ্রবেশের সুযোগ না থাকে, সে বিষয়ে সাবধান থাকার আহবানও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
হেফাজতের ৪ দফা দাবি
চলমান সংকট নিরসনে সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে এ দাবি জানান হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী।
১. আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কুরআন-সুন্নাহ তথা ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে মহান জাতীয় সংসদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন পাশ।
২. কাদিয়ানি সম্প্রদায় (আহমদিয়া জামাত) কুরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াস ও সারা বিশ্বেরওলামা-মাশায়েখ এবং মুফতিদের সর্বসম্মত ফতোয়া মোতাবেক কাফের। তারা মুসলমান না হয়েও মুসলমানদের লেবাসে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে ঈমানহারা করছে। দেশে তাদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারণার মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে অরাজক পরিস্থিতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত করছে। সুতরাং কাদিয়ানিদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের যাবতীয় অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
৩. বিভিন্ন মামলায় এখন পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা কারাগারে আটক আছেন। কারাগারে থাকা আলেম-উলামা ও হেফাজতের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
৪. বাংলাদেশের সংবিধানে মিমাংসিত ও অপরিবর্তনশীল বিষয় “রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম”-কে কটাক্ষ করে কতিপয় দায়িত্বশীলদের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষোভ এবং ঘৃণা প্রকাশ করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের জন্যে সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।