এখন ইভ্যালিতে বিনিয়োগ কি লাভজনক হবে?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২, ০২:৪৫ এএম

এখন ইভ্যালিতে বিনিয়োগ কি লাভজনক হবে?

ডেসটিনি,যুবক, গ্রামীন টেলিকমের মত ইভ্যালির করুন অবস্থা হবে এমনটাই অনেকেই ধারণা করেছিল। কিন্তু সকল জল্পনা কল্পনাকে হার মানিয়ে ইভ্যালি পুনরায় চালু হয়েছে। তবে ইভ্যালিতে বিনিয়োগের আশার পাশাপাশি শঙ্কারও জন্ম দিয়েছে। 

সদ্য পদত্যাগকৃত বোর্ডের করা অডিট প্রতিবেদনে ৪৭ হাজার কোটি টাকার গড়মিল ও ২ লাখ পুরাতন গ্রাহকদের ভাগ্যে কি হবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। 

ইভ্যালির দায়িত্ব নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। ইতোমধ্যে হাইকোর্ট নির্দেশিত পরিচালনা বোর্ডের সব সদস্য পদত্যাগ করেছে। তারা অডিট রিপোর্ট, পরিচালনা বোর্ডের মতামত হাইকোর্টে জমা দেয়। সেখানে বেশ কিছু রিকমেন্ড করা হয় যেগুলো ইভ্যালি থেকে গ্রাহকদের আগের সুযোগ সুবিধা কম পাাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে পূর্বের পাওনাদারদের টাকা মিটিয়ে কি ইভ্যালি নতুন করে শুরু করবে। এক কথায় বলতে গেলে না। ইভ্যালির কাছে গ্রাহক, মার্চেন্ট ও অন্যান্য সংস্থার কাছে দেনা ৫৪৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে মার্চেন্টদের পাওনা ২০৫ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩ টাকা। এর বিপরীতে ইভ্যালির কাছে ২৫ কোটি টাকার পণ্য রয়েছে। কিন্তু গ্রাহকের তথ্য আগের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকায় সেই অর্থছাড় করা এখনই সম্ভব নয়। 

যার ফলে নতুন করেই আবার ইভ্যালির ব্যবসা শুরু করতে হবে। সার্ভারের তথ্য ই ভ্যালির সাবেক সিইও মো. রাসেলের কাছে রয়েছে। তার জামিন না হওয়া পর্যন্ত সেই সার্ভার পুরোপুরিভাবে ফিরিয়ে আনা যাবেনা। সুতরাং নতুন গ্রাহক ও মার্চেন্ট দিয়েই ব্যবসা শুরু করতে হবে ই ভ্যালির। 

তবে পূর্বের গ্রাহকরা ঠিক কিভাবে টাকা ফেরত পাবে সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। 

নতুন করে শুরুতেই অনেক পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে ইভ্যালি। যার ফলে গ্রাহকরা আগের মত বিশাল অংকের ছাড় পাবে না। যেখানে আপনি ৫ লাখ টাকার বাইক ৩ লাখ টাকায়ই কিনতে পারতেন। সেখানে এখন মাত্র ১০ শতাংশ অর্থৎ ৫০ হাজার ছাড় পেতে পারেন। আর মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গেটওয়ের মাধ্যমে এই ধরনের ই কমার্সের লেনদেন সম্পন্ন হবে। একটি নির্দিষ্ট পরিমানের ছাড় দেয়া হবে পণ্যে। সেখানে একটি ডাউনপেমেন্ট দিয়ে বাকি অর্থ গেটওয়েতে জমা থাকবে। যখন আপনি পণ্যটি হাতে পাবেন তখন গেটওয়ে থেকে অর্থ ইভ্যালির কাছে দেয়া হবে। যদিও এটি এখনই বাস্তবায়ন হবে না। তবে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে।

ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদেও থাকবে বাড়তি সতর্কতা। 

শামীমা নাসরিন ও আরও দুজন আত্মীয় নিয়ে ইভ্যালির পর্যদ গঠিত হবে। তবে এবারের পর্ষদে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কিংবা তার চেয়ে নীচের পদের একজন সদস্য বোর্ডে থাকার পাশাপাশি ই ক্যাবের একজন প্রতিনিধি এই পর্ষদে থাকবে।  

শামীমা নাসরিনের আইনজীবী আহসানুল করিমের মতে নতুন বোর্ড ইভ্যালির নিজস্ব কৌশলেই প্রতিষ্ঠানটি চালাবে। প্রথমে অর্থ প্রবাহ ও ব্যবসা পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর দিকে মনোযোগ থাকবে। কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী হলে পুরনো গ্রাহকদের পাওনা অর্থ যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সব মিলিয়ে আপাতত নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক হতে যাচ্ছে ইভ্যালি। নতুন বিনিয়োগে কেমন সাড়া পায় তার ওপর নির্ভর করছে পুরাতন বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য।

লেখক: সাংবাদিক

 

Link copied!