ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪, ০৬:২৫ পিএম
দ্রব্যমূল্য ও বাজার সিন্ডিকেট ইস্যুতে সংসদে উত্তাপ দেখা গেল। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারবেন কী না- প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেন, আপনারাই বলেন বাজারে পণ্যের মজুত আছে। আবার বলেন, সিন্ডিকেট দাম বাড়ায়। এখন বলেন, বাজারের এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারবেন কি না।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে মুজিবুল হক চুন্নু এ প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, ‘আগের বাণিজ্যমন্ত্রীকে এই সংসদেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম, জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারবেন কি না। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব নয়।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুদিন আগে মজুতদারদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ সরকারপ্রধান কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন। এখন আমার প্রশ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনারাই বলেন বাজারে পণ্যের মজুত আছে। আবার বলেন সিন্ডিকেট দাম বাড়ায়। তাহলে বাজারের এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারবেন কি না? সেটা আমি জানতে চাই।
একই অধিবেশনে সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদও দ্রব্যমূল্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলার পরও দৃশ্যমান কিছু দেখা যাচ্ছে না। সরকারের চেয়ে কীভাবে সিন্ডিকেট শক্তিশালী হয়? আমাদের দেশের বিভিন্ন সংস্থা আছে, তথ্য আছে, তাহলে কীভাবে সরকারের চেয়ে এরা বড় শক্তিশালী হয়?
সিন্ডিকেট এত শক্তিশালী হয়ে গেছে যে তারা প্রতিদিন সকালে মোবাইলের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করে দেয়। এরা সকালে এসএমএসের মাধ্যমে চিনির, ডিমের, মাংসের, তেলের এমনকি তাজা শাক-সবজির দাম নির্ধারণ করে দেয় বলেও জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
ব্যবসায়ীদের এই অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন তিনি। এ সময় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কড়া সমালোচনা করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
অন্যদিকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙার কোনো কারণ নাই। আমরা এ ব্যাপারে গণ-বণ্টন ব্যবস্থার পূর্ণ রেশনিং চালু করার কথা বলেছিলাম। সরকারকে বিষয়টা আরেকবার বিবেচনার জন্য বললাম। কারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকারের তা জানা। অন্য দলকে এ ব্যাপারে দোষ দিয়ে লাভ নেই। নিজের মানুষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
অধিবেশনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর। আমার বিশ্বাস সিন্ডিকেট ভাঙাও সম্ভব।’