দেশে প্রথমবারের মতো জ্বালানি তেলের খনির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সিলেটের জয়ন্তপুর ও মৈনাটঘাটে সিলেট গ্যাসক্ষেত্রে ১০ নম্বর কূপের প্রথম স্তরে তেল পাওয়ার কথা জানান তিনি।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।
নসরুল হামিদ জানান, ২ হাজার ৫৭৬ মিটার গভীরতায় খনন সম্পন্ন করা হয়। প্রথম দিন ২ ঘণ্টায়ই ৭০ ব্যারেল তেল উঠেছে। পরে তেল উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল (১৫৯ লিটার) তেলের প্রবাহ পাওয়া গেছে। তেলের মজুদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে ৪ থেকে ৫ মাস পর। এছাড়াও এই কূপে চারটি স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। দুই মাস আগে এ কূপ খনন শুরু হয়।
উত্তোলিত তেল পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে আগামী ২০ বছর এখান থেকে সুফল পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, ১৩৯৭-১৪৪৫ মিটার গভীরতায় আরও একটি জোন পাওয়া যায় যেখানে ৮ ডিসেম্বর টেস্ট করে তেলের উপস্থিতি জানা যায়, যার প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্রাভিটি ২৯.৭ ডিগ্রি। সেলফ প্রেসারে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, সিলেট ১০ নম্বর কূপে ৪টি স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। নিচের স্তরটি ২ হাজার ৫৪০ থেকে ২ হাজার ৫৫০ মিটার টেস্ট করে আড়াই কোটি ঘনফুট গ্যাসের প্রবাহ পাওয়া যায় এবং ফ্লোয়িং প্রেশার ৩ হাজার ২৫০ পিএসআই।
মজুতের পরিমাণ ৪৩ থেকে ১০০ বিলিয়ন ঘনফুট। ২ হাজার ৪৬০ থেকে ২ হাজার ৪৭৫ মিটারে আরও একটি ভালো গ্যাসের স্তর পাওয়া যায়, এখানে টেস্ট করলে আড়াই থেকে তিন কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। এ ছাড়া ২ হাজার ২৯০ থেকে ২ হাজার ৩১০ মিটারে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২ হাজার ৫৪০ এবং ২ হাজার ৪৬০ মিটার গভীরতায় একযোগে উৎপাদন করা হলে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর এটি অব্যাহত থাকবে এবং গড় ভারিত মূল্য হিসেবে এর মূল্য প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। যদি দিনে দুই কোটি ঘনফুট হারে উৎপাদন করা হয়, তাহলে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে গ্যাস উৎপাদন করা যাবে।
এর আগে ১৯৮৬ সালে হরিপুরে তেলের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই কূপটির স্থায়িত্ব ছিল পাঁচ বছর। সেখানে গ্রাভিটি পাওয়া গিয়েছিল এপিআই গ্রাভিটি ২৭ ডিগ্রি। এবার সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের নতুন কূপে ১ হাজার ৩৯৭ থেকে ১ হাজার ৪৪৫ মিটার গভীরতায় ৮ ডিসেম্বর তেলের উপস্থিতি জানা যায়। প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্র্যাভিটি ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি পাওয়া গেছে।