অগ্নিকাণ্ডের এক বছর: বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা কি ক্ষতি পোষাতে পেরেছেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৭, ২০২৪, ০৮:৩১ এএম

অগ্নিকাণ্ডের এক বছর: বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা কি ক্ষতি পোষাতে পেরেছেন?

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড। ফাইল ছবি

গত বছর রোজার মাসেই অনাকাঙ্ক্ষিত এক ইতিহাসের সাক্ষী হতে হয়েছিল বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের। বছর ঘুরে আবার এল রোজা। সেই লোকসান কাটিয়ে এই রোজায় কি আদৌ তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছেন?

বঙ্গবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের প্রতিবেদকের কথা হয়। ঈদ সামনে রেখে ব্যবসার পরিস্থিতি জানিয়েছেন তাঁরা।

কাপড় ব্যবসায়ী মো: শাহাদত হোসেন জানান, ‘বেচাকেনা তুলনামূলক কম। গত বছর মার্কেট পুড়ে যাওয়ার খবর শুনে অনেকেই দেখতে আসছেন এর পাশাপাশি কেনাকাটাও করেছেন, তবে সেই তুলনায় এবছরে ক্রেতার সংখ্যা কম।’

রোজা উপলক্ষে বেচাকেনার কথা জানতে চাইলে পাইকারী বিক্রেতা মো: আব্দুর সাত্তার ব্যাপারী জানান, ‘শবে বরাত থেকে মোটামুটি বিক্রি শুরু হয়ে এখনো চলছে। গতবছর মার্কেটে আগুন লাগার পর থেকে ক্রেতাদের মধ্যে সহানুভূতি বজায় রয়েছে ‘

এদিকে ব্যবসার হালচাল সম্পর্কে বলতে গিয়ে ব্যবসায়ী মো: সুমন জানান, ‘আগে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা প্রতিদিন বিক্রি হতো কিন্তু এখন আর কোনো ক্রেতাও নাই বেচাকেনাও নাই।’

বাসাবো থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন সারা। তিনি জানান, ঘুরে দেখছেন দোকান। তবে মনের মতো কিছু পাননি।

অন্যদিকে, বিউটি বেগম থ্রিপিস কেনার জন্য গেলেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে অভিযোগ করেছেন।  ফলে অনেক জিনিস চাইলেও কিনতে পারছেন না। এছাড়া সীমিত কালেকশনের কারণেও পছন্দসই জিনিস সহজে মিলছে না বলে জানান তিনি।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে চাঁদরাত পর্যন্ত ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে মার্কেট কমিটি। এর পরই সব ভেঙে নির্মাণ করা হবে নতুন মার্কেট ভবন।

গত বছর এপ্রিলে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটে (বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, মহানগর ও আদর্শ) সব মিলিয়ে দোকান ছিল ২ হাজার ৯৬১টি। এ ছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে ৫৯টি ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সে ৩৪টি দোকান আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

দক্ষিণ সিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গবাজারে ক্ষতের পরিমাণ ছিল ৩০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে মালপত্রের ক্ষতি হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকার বেশি। আর মার্কেটগুলোয় অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ ছাড়া দোকানের মালিক-কর্মচারীদের মানবিক ও মানসিক বিপর্যয়সহ ক্ষতির পরিমাণ এবং চাকরিহীনতার আর্থিক মাপকাঠি নিরূপণ করা দুরূহ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

Link copied!