ঋণ পরিশোধের সীমা আবারও বাড়লো

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৮, ২০২১, ০১:৪৩ এএম

ঋণ পরিশোধের সীমা আবারও বাড়লো

করোনা মোকাবিলায় খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে আরও এক দফা ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ কিস্তি পরিশোধ না করলে চলতি মাসের (আগস্ট) মধ্যে খেলাপি হতো—এমন ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সীমা বৃদ্ধি

ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে ঋণ পরিশোধের এই সীমা আরও ছয় মাস বাড়িয়ে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সময়সীমা অনুযায়ী এই বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে—এমন কিস্তিগুলোর ২৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করা হলে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ঋণ খেলাপি করা যাবে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব প্রলম্বিত হওয়ায় চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রফতানি বাণিজ্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কি আছে নতুন শর্তে

নতুন সার্কুলারে গ্রাহকদের উদ্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তির ২৫ শতাংশ জমা দেওয়ার পর, কিস্তির বাকি ৭৫ শতাংশ পরবর্তী এক বছরের মধ্যে জমা দিতে হবে। এছাড়া অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে। এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে ঋণ পরিশোধের সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

তখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, ঋণ বা ঋণের যেসব কিস্তি ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া হবে সেসব ঋণ বা ঋণের কিস্তির কমপক্ষে ২০ শতাংশ আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই সব ঋণ খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণ বা ঋণের কিস্তির বকেয়া অংশ সর্বশেষ কিস্তির সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে।

তার আগে গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়মিত যেসব ঋণের কিস্তি গত মার্চ পর্যন্ত বকেয়া ছিল সেগুলো ৩০ জুনের মধ্যে ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধ করলে ওইসব ঋণ খেলাপি করা যেত না।

বিভিন্ন সংগঠনের দাবি ছিল

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এর আগে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো থেকে ঋণ পরিশোধের সীমা বাড়ানোর দাবি তুলেছিল। সম্প্রতি এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ শ্রেণিকরণ না করার অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক রফতানিকারকরা। পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতায় পুনঃতফসিলীকরণের অনুরোধও জানিয়েছেন তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর এসব অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান। যদিও ২০২০ সালজুড়ে ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত ছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে কোনও অর্থ পরিশোধ না করেই ঋণগ্রহীতারা খেলাপি হওয়া থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন।

Link copied!