পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের দিনে সর্বোচ্চ দাম বেড়েছে পি কে হালদারের কারণে বিপদে পড়া দুই কোম্পানির শেয়ারের। সোমবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে দিনের লেনদেনের ধারার বিপরীতে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দামে বেচাকেনা হয়।
এমনকি এক পর্যায়ে শেয়ার দুটি বিক্রেতা শূন্য হয়ে যায়। বিপুল সংখ্যক ক্রয় আদেশের বিপরীতে এ দুটি শেয়ারের বিক্রেতা ছিল খবুই কম।
তবে অনিয়মের মাধ্যমে পি কে হালদারের বিপুল অর্থ আত্মসাতের জের টেনে চলা এ দুটি কোম্পানির দাম বাড়লেও আরেক কোম্পানি বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দাম কমেছে। আগের দিনের চেয়ে এটির শেয়ার দর হারিয়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।
আর শনিবার ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া পি কে হালদারের কারণে বিপদে পড়া ব্যাংক বর্হিভূত আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (পিএলএফএস) লেনদেন বেশ কিছুদিন থেকে বন্ধ রয়েছে।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার নামে বেনামে এ চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে এগুলোর মালিকানায় এসেছিলেন। এরপর সেগুলো থেকে কাগুজে কোম্পানির নামে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন।
তার অর্থ আত্মসাতের বিষয়গুলো সামনে এলে তিনি ২০১৯ সালে দেশ থেকে পালিয়ে যান। শনিবার পি কে হালদার নামে পরিচিত প্রশান্ত কুমার হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট- ইডি।
তার জালিয়াতির জের টেনে চলা চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরই আর্থিক সূচক নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে কয়েক বছর ধরেই। আমানত ফেরত দিতে না পারা, মূলধন সঙ্কট, খেলাপি ঋণে লোকসান গুনছে এগুলো। এর মধ্যে পিএলএফএস বন্ধই হয়ে যায়।
পি কে হালদার ধরা পড়ায় এসব কোম্পানি টাকা ফেরত পাওয়ার সুযোগ তৈরি হল- বিনিয়োগকারীরা এমন ধারণার উপর ভিত্তি করেই এসব শেয়ার কিনতে আগ্রহী হন বলে অনেকের বক্তব্য।
সোমবার ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।এদিন ডিএসইতে সার্বিক দরপতন ২ শতাংশ ছাড়ালেও লেনদেন শুরুর পর থেকেই এ দুই কোম্পানির দাম বাড়তে শুরু করে। ফাস ফাইন্যান্সের দাম সকালেই সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ৫০ পয়সা বেড়ে ৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৬০ পয়সা হয়ে যায়। আর দিনশেষে আগের দিনের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি; ৪১ লাখের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার এ কোম্পানির মাত্র তিন লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
অপরদিকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ারও শুরুর দিকেই দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর ৬ টাকা হয়ে যায়। আগের দিনের দর ছিল দিকে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এ শেয়ারও আগের দিনের চেয়ে সাড়ে ১২ গুণ বেশি লেনদেন হয়েছে। সোমবার ৯ লাখ ৪৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়। আগের দিন কেনাবেচা হয়েছিল মাত্র ৭৫ হাজার শেয়ার।