জুন ১, ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকারের মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং বর্তমান আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী অর্থবছরের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে যৌক্তিকভাবে সাজিয়েছি। আগামী অর্থবছরে সামাজিক সুরক্ষা খাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার হার পরিবর্তন করা হয়েছে।”
পরিবর্তনের সামগ্রিত চিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৭.০১ লাখ থেকে ৫৮.০১ লাখ জনে এবং মাসিক ভাতার হার ৫০০ টাকা হতে ৬০০ টাকায় উন্নীতকরণ; বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৪.৭৫ লাখ থেকে ২৫.৭৫ লাখ জনে এবং মাসিক ভাতার হার ৫০০ টাকা হতে ৫৫০ টাকায় বৃদ্ধি; প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩.৬৫ লাখ হতে ২৯ লাখ জনে বৃদ্ধি; উল্লেখ্য, প্রতিবন্ধী ডাটাবেজ এর আওতাভুক্ত সকলকে এ ভাতার আওতায় আনা হয়েছে “
আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবনায় বলেন, প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তির হার বাড়িয়ে প্রাথমিক স্তরে ৭৫০ টাকা হতে ৯০০ টাকায়, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা হতে ৯৫০ টাকায় এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৯০০ টাকা হতে ৯৫০ টাকায় বৃদ্ধি; হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮১৫ জন হতে ৬ হাজার ৮৮০ জনে উন্নীত করা এবং বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬০০ জন হতে ৫ হাজার ৬২০ জনে বৃদ্ধি করা; অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৫৭৩ জন হতে ৮২ হাজার ৫০৩ জনে বৃদ্ধি করা এবং বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৫০ জন হতে ৫৪ হাজার ৩০০ জনে উন্নীত করা।
অর্থমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, “ উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট ২১ হাজার ৯০৩ জন হতে ২৬ হাজার ২৮৩ জনে বৃদ্ধি করা; মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ৫৪ হাজার জন হতে ১৩ লক্ষ ৪ হাজার জনে উন্নীত করা; অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কার্যক্রমে উপকারভোগীর ভাতার হার দৈনিক ২০০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ টাকায় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে “
মুস্তফা কামাল বলেন, “ভাতাভোগী ও ভাতার সংখ্যা পরিবর্তন ছাড়াও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে লক্ষ্যভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য একে জি-টু-পি পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বলেন, “এরই মধ্যে ২৫টি ক্যাশভিত্তিক কর্মসূচির মধ্যে ২২টি কর্মসূচির অর্থ এ পদ্ধতিতে সরাসরি উপকারভোগীর ব্যাংক হিসাব/মোবাইল ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে অবশিষ্ট ক্যাশভিত্তিক কর্মসূচিসমূহকে জি-টু-পি পদ্ধতির আওতায় আনা হবে। বর্তমানে ৮০ শতাংশের অধিক ক্যাশভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা জি-টু-পি পদ্ধতিতে প্রদান করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তাঁর পঞ্চম বাজেট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য তিনি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।