সবাইকে ২ হাজার টাকা কর দেয়ার অভ্যাস করা উচিৎ - পরিকল্পনা মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৩, ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম

সবাইকে ২ হাজার টাকা কর দেয়ার অভ্যাস করা উচিৎ - পরিকল্পনা মন্ত্রী

প্রস্তাবিত বাজেটে ২ হাজার টাকা কর দেয়া নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। অনেকে মার্গারেট থ্যাচারের মডেলটাকে তুলে আনছে। তবে আমরা মনে করি এই ধরনের কর ব্যবস্থা সবার কর দিতে আগ্রহী করে তুলবে। শনিবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই) এবং পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর যৌথ বাজেট পরবর্তী আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেছেন, বাজার ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখলে মূল্যস্ফীতি এমনিতেই কমে আসবে। সমাজ অস্থিতিশীল হলে করোনা এবং যুদ্ধের চেয়ে খারাপ অবস্থা হবে। কিন্তু বর্তমানে সমাজ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তায় ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। ভ্যাট আইন অবশ্যই আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে। আপনি ভ্যাট না দিতে চাইলে জিনিসপত্র কিনবেন না। ভ্যাট একটি ভালো রাজস্ব আহরণ পদ্ধতি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিকে এগিয়ে নিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে। কিন্তু ভতুর্কির ধারণা থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসতে। ট্যাক্স ক্যালেক্টর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ৭ জেলায় রাজস্ব আহরণ করা হবে। এক্ষেত্রে ভালো ফল দিলে এ পদ্ধতি স্থায়ী হতে পারে। মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। দুই হাজার টাকা করের পদ্ধতি মানুষকে করের সসঙ্গে সম্পৃক্ত করবে। কর দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করবে।’
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এমসিসিআই ভবনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এছাড়াও ছিলেন পিআরআইএর চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, পিআরআই এর ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ, এমসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান, এমসিসিআইয়ের ডিরেক্টর আদিব এইচ খান।
পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বলেন, ‘২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ শতাংশ কম ছিল। গত বছরে দেখা গেছে রাজস্ব আদায় গড়ে ১০ শতাংশ করে বৃদ্ধি পায়। এ বছর সেটি ৮ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু এ বছর রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ শতাংশ। এটি কখনই্ হয়নি। তবে প্রকৃতপক্ষে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি করতে পারে। রাজস্ব বোর্ড পুলিসিন সংস্থা হয়ে যাচ্ছে। মানুষকে হেনস্তা করে কর আতদায় সম্ভব নয়। দুর্নীতি ও কর ফাঁকি না কমিয়ে গরিবদের ওপর চাপ দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। কর ব্যবস্থায় সুশাসন আনতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে না পারলে বড় ধরনের হুমকিতে পড়বে অর্থনীতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর আদায়ের সমস্যাটি সুশাসনের সমস্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত।’ ধনীরা কম ট্যাক্স দিচ্ছেন বলে তিনি মনে করেন। ধনীদের কাছে বেশি ট্যাক্স আদায়ের পরিবর্তে সাধারণ লোকের কাছে দুই একশ টাকা চাওয়া খয়রাতির মতো।’
এমসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান বলেন, ‘গ্যাস বিদ্যুতের দাম কমাতে না পারলে ব্যবসায়ে ব্যয় বাড়বে। টিআইএন থাকলে ২ হাজার টাকার কর প্রদানের যে প্রস্তাব বাজেটে দেওয়া হয়েছিল তা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাজেটে জিডিপির ঘাটতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু এটা আরও বাড়তে পারে।’
পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য ট্যারিফ কমাতে হবে। সাময়িক পদ্ধতিতে আমদানি কমানোর জন্য বাজার ব্যবস্থাপনার দরকার হবে। নির্বাচনের সময় বাজেটে বেশি ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু এবার বাজেটে তেমন দেখা যাচ্ছে না।’
এমসিসিআইয়ের ডিরেক্টর আদিব এইচ খান বলেন, ‘ইনকাম ট্যাক্স আইন পর্যালোচনা করার জন্য আরও সময় দেওয়া দরকার। গাড়ির উপরে কার্বন ট্যাক্স ধরা হয়েছে। কিন্তু বাস ট্র্যাকের এই কর কার্যকর হবে কিনা সেটি স্পষ্ট করা দরকার। সফটওয়্যারের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেটি আশা করিনি।’

Link copied!