সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে খুঁজে বের করতে রড, স্ট্যাম্প ও লাঠি নিয়ে হলে তল্লাশি চালিয়েছে ছাত্রলীগ।
সোমবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিভিন্ন হলের কক্ষ থেকে বেরিয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মাদার বখশ হলের প্রথম ও দ্বিতীয় ব্লকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা থালা বাজিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ প্রভৃতি শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের শ্লোগান দিতে ও হাড়ি-পাতিলের শব্দ করতে নিষেধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ হিল গালিব হলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। গতকাল সোমবার রাত একটা ১০ থেকে একটা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত মাদার বখশ হলে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ হিল গালিব ও তার সহযোগী নেতাকর্মীরা রড, স্ট্যাম্প, লাঠি নিয়ে হলের তৃতীয় তলার বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি পরিচালনা করেন। একপর্যায়ে তিনি ও তার সহযোগীরা শিক্ষার্থী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তল্লাশির মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন হল প্রভোস্ট মো. রোকোনুজ্জামান আবাসিক শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, ও প্রক্টর আসাবুল হক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষার্থীর হল তল্লাশির এখতিয়ার রাখেন কিনা এবং কোনও শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষমতা রয়েছে কিনা- গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে প্রভোস্ট রোকনুজ্জামান বলেন, “এটা অবশ্যই নিয়ম বহির্ভূত। এমন কাজের প্রমাণ পেলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো।” এ সময় সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে বলা হলে তিনি বলেন, “এখন অনেক ধরনের ভিডিও-ছবি পাওয়া যায়। সবকিছু আমলে নেওয়া যাবে না।”
রোকোনুজ্জামান জানান, তিনি হলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখতে পেয়েছেন। তল্লাশি চালানোর মতো কিছু দেখতে পাননি। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে যা যা করণীয়, হল প্রশাসন তাই করবে।
লাঠিসোটা বহন করে এনে ছাত্রলীগের তল্লাশির বিষয়ে তিনি জানান, “শিক্ষার্থীদের সংক্ষুব্ধ একটা অংশ যদি অভিযোগ করেন, তাহলে হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।”
এদিকে লাঠিসোটা বহনের বিষয়টি অস্বীকার করে আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, “আমি নিজেই খালি হাতে হলে ঢুকেছি। বিষয়টা আমার জানা নেই।”
তল্লাশির পর ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রাধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেন এবং পরবর্তীতে হল ত্যাগ করেন।