মে ১৬, ২০২৫, ০৪:০১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
তিন দফা দাবিতে ঢাকার কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমাবেশ চলছে।
শুক্রবার, ১৬ মে পবিত্র জুমার নামাজের পর বেলা সোয়া ২টার দিকে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বিভাগের অ্যালামনাইরাও যোগ দিয়েছেন।
সমাবেশ কর্মসূচি আজ সকাল ১০টায় হওয়ার কথা ছিল। পরে ঘোষণা দিয়ে সমাবেশের সময় দেড় ঘণ্টা পিছিয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন। এরও পরে সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে বক্তারা তিন দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। তারা বলছেন, এই তিন দফা দাবি যৌক্তিক। অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত এ তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া উচিত। দাবিগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়নের ঘোষণা যতক্ষণ না দেওয়া হবে, ততক্ষণ এ আন্দোলন চলবে। এ সময় বক্তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক শিক্ষার্থী মাকসুদুর রহমান বলেন, তিন দফা দাবির সবগুলোই যৌক্তিক। এ দাবিগুলো আজকের নতুন কোনো দাবি নয়। অনেক দিন ধরেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় এসব দাবি জানিয়ে আসছেন। তাই দাবিগুলোর পুরোটাই মেনে নিতে হবে।
সাবেক শিক্ষার্থী সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাসদ মার্ক্সবাদীর নেতা মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসনের দাবি, বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি সরকারকে মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের হামলার বিচার করতে হবে।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর আমির শাহীন আহমেদ খান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন দফা দাবি দ্রুত মেনে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। নয়তো সাবেক-বর্তমান সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আরও জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশের ফাঁকে ফাঁকে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বক্তাদের বক্তব্যে শেষে বিভিন্ন বিপ্লবী গান সমবেত কণ্ঠে গাইছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশ চলাকালে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা ছায়া যুক্তস্থানে অবস্থান নিয়েছেন। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। জুমার পর গণ-অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া থাকলেও এখনো ওই কর্মসূচি শুরুর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।
তিন দফা দাবিতে গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার অভিমুখে লংমার্চ নিয়ে যাওয়ার সময় কাকরাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর বেলা দুইটা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তখন থেকে সেখানে তাঁদের লাগাতার অবস্থান চলছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনবৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার তিন দফা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।