রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়ামকে কেচি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করেছেন একই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী আসিম আবদুল্লাহ।
গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে নগরীর কাজলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত সিয়ামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত সিয়াম বিন মালিক আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে। অন্যদিকে অভিযুক্ত আসিম আবদুল্লাহ একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা রাজশাহীর মেহেরচণ্ডী এলাকায়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, আসিম আবদুল্লাহ ও সিয়াম বিন মালিক কাজলা এলাকার জামরুলতলায় একটি ভাড়া বাসায় একই রুমে থাকেন। রুমের মধ্যে সিয়ামের উচ্চস্বরে গান শোনা, বন্ধুদের নিয়ে আসা, রুম অপরিষ্কার রাখা নিয়ে আপত্তি ছিলো আবদুল্লাহর। এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন তাদের মধ্যে তর্কাতর্কিও হয়েছে। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহের শনিবার রাতে সিয়ামকে নিয়ে ওই বাসার কয়েকজন সিনিয়র মিটিংয়ে বসে। সেখানে একপর্যায়ে আবদুল্লাহ সিয়ামকে ছুরিকাঘাতে উদ্যত হয়। পরে সিয়াম এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন- ‘একটুর জন্য হত্যা থেকে বেঁচে গেলাম।’ এ ঘটনার পর গতকাল দুপরে আইন বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের দুজনকে বসিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। পরবর্তীতে রাতে আবদুল্লাহ সিয়ামকে ফেসবুক থেকে পোস্টটি সরিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু সিয়াম পোস্ট সরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হতে সিয়ামের ওপর হামলা চালায় আবদুল্লাহ।
ভুক্তভোগী সিয়াম বিন মালিক বলেন, “খুব ছোটখাটো বিষয়ে ভাই ভুল ধরতো। আমার রুমে বন্ধুদের আসা নিয়েও তিনি ঝামেলা করতেন। চলতি সপ্তাহের শনিবার তিনি বাসার সিনিয়রদের নিয়ে বসেন এবং সেখানে আমাকে বিশ্রি ভাষায় গালাগালি করেন। একপর্যায়ে আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে আসেন। কিন্তু সিনিয়র ভাইরা তাকে থামিয়ে দেন। এরপর থেকেই আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরে গতকাল (রোববার) রাতে আমি বাসায় গেলে তিনি আমাকে আমার ফেসবুক পোস্ট ডিলেট করতে বলেন। কিন্তু আমি তাকে বলি, পোস্ট ডিলেট করবো না। তখন তিনি আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি আমাকে তার টেবিলে থাকা কেচি দিয়ে আঘাত করে। পরে আমাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়। আমার মাথায় দুইটা সেলাই লাগছে।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত আসিফ আবদুল্লাহ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, “সিয়াম কোনো ধরনের নিয়মকানুন মানতো না। এ জন্য চলতি সপ্তাহের শনিবার বাসায় কয়েকজন সিনিয়র মিলে তাকে নিয়ে বসি। তখন সে বেশ বেয়াদবি করে। আমি ওকে শুধু ভয় দেখানোর জন্য হাতে ছুরি নিয়েছিলাম। কিন্তু সে ফেসবুকে বিষয়টা অতিরঞ্জিত করে লেখে। পরে গতকাল (রোববার) বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিলে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। তারপরও সে ফেসবুক থেকে পোস্টটা ডিলেট করেনি। তাকে পোস্ট ডিলেট করতে বললে সে বেয়াদবি করে। পরে আমি তাকে একটি থাপ্পড় মারি। আমার হাতে আংটি থাকায় মাথায় আঘাত পায় সে।”
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “আমি এখনও কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”