করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে আগামী নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতি কমে আসলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তায় এসএসসি এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে অ্যাসাইনমেন্ট ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করো হবে জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘ এসএসসি ও এইচএসসিতে মূল্যায়ণ হবে গ্রুপভিত্তিক। বাংলা, ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়ের মূল্যায়ন হবে না। অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করা হবে।’
এসএসসিতে ২৪ অ্যাসাইনমেন্ট, এইচএসসিতে ৩০টি
অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ১২ সপ্তাহে ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তারা প্রতি সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবেন। এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের জন্য ৩০ টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। প্রতিটি পত্রে পাঁচটি করে অ্যাসাইনমেন্ট করবেন। সপ্তাহে এসব শিক্ষার্থীরা দুটি অ্যাসাইনমেন্ট করবেন। এর ফলে আগে যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেওয়া হয়েছিল এর মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শেষ করা হবে।’ তবে অতিরিক্ত বিষয়ে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।
ঈদ উল আজহার পর পরীক্ষার ফরম পূরণ
ঈদ উল আজহার পর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়া হবে। ফলে কোনো শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না।’ এবার যেহেতু কম বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে সেক্ষেত্রে ফরম পূরনেও অল্প টাকা দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
সাবজেক্ট মাপিং বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এবারও গত বছরের মতো সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হবে।যেসব শিক্ষার্থীর পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত আছে তাদেরকে এসব বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট বা পরীক্ষা দিতে হবে।
অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতোই তাদের অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে।’
প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি এবং এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে একটানা বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই ছুটি আছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটিও। এর ফলে আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, এ অবস্থায় ‘অটো পাস’ না দিয়ে যেকোনো উপায়ে মূল্যায়নের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এবার শিক্ষা বোর্ডগুলোও একেবারে ‘অটো পাস’ দিতে চায় না।