দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বৃহস্পতিকবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আগামী ২২ ফেব্র্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্নাস শরু হবে। যেসব শিক্ষার্থী দুই ডোজ করোনার টিকা গ্রহণ করেছে তারাই সশরীরে ক্লাস করার সুযোগ পাবে।” তবে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার জন্য আরও দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করার কথা তিনি জানান।
দীপু মনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২২ ফেব্রুয়ারির পর আরও ১০ থেকে ১৪ দিন সময় নেওয়া হবে।”
এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও সরকারের দেওয়া ১১ দফা বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানতে হবে। নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কেনো নির্দেশনা দেওয়া হবে না।
গতকাল বুধবার রাত ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় এক ধন্টা ধরে চলা বৈঠকে কমিটির সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
ওই বৈঠকে পরামর্শক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, “কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এবং সরকার চাইলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারে “
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গোটা বিশ্বকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এই প্রতিকূল স্রোতের মুখোমুখি বাংলাদেশও। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মতো শিক্ষা খাতও বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেলে বন্ধের প্রায় দেড় বছর পর গত বছরের ১৬সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে পরিস্থিতির অবনতি হলে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়।
দেশে প্রথমবার করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও চালু হয়।পরবর্তীতে করোনা বেড়ে যাওয়ায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ আছে। এই ছুটি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
দেশে করোনা পরিস্থিতি বলা যায় আগের মতোই। প্রতিদিন মৃত্যু ও শনাক্তের শঙ্কা উঠানামা করছে। অন্যদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে এসএসসি ২১ ব্যাচের পরীক্ষার সময়। গত বছর এসএসসি ২০২০ ব্যাচের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ফেব্রুয়ারিতে। এ বছর ফেব্রুয়ারি চলছে। কিন্তু এর মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার বা দেওয়ার মতো কোনো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে করোনার ভয় রয়েছে। ফলে তড়িঘড়ি পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী শিক্ষার্থীরা।
