ঋতুর পালা বদলের নিয়ম মেনে কনকনে শীত আর পরিবর্তিত আবহাওয়ায় বসন্তের পর এসেছে গ্রীষ্ম। ঋতুচক্রের এই সময়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে রোদর তাপমাত্রা। যা মানিয়ে নিতে বড়দেরই বেশ কষ্ট হয়। তবে অতিরিক্ত ঘাম, র্যাশ, ঠাণ্ডা-কাশি আর ঘামাচির কারণে এই গরমে বেশি কষ্ট পায় কোমলমতি শিশুরা। তাই অভিভাবকদের শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিতে গ্রীষ্মে দরকার বাড়তি যত্নের।
রুক্ষ আবহাওয়ায় শিশুকে ঠাণ্ডা রাখার বেশ কিছু পরামর্শ প্রায়ই দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। চলুন সেসব পরামর্শ জানা যাক-
১. এই গড়মে প্রতিদিন সকালে, বিকেল ও রাতে তিনবার পোশাক বদলে দেবেন। এতে ঘাম ও জীবাণু থেকে সুরক্ষিত থাকবে শিশুর ত্বক।
২. শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে ও গোসলে সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
৩. নিয়মিত নখ-চুল কেটে ছোট করে রাখতে হবে।
৪. ত্বকের সুরক্ষায় গরমে এসি ব্যবহার না করে ফ্যানের বাতাসে থাকা শ্রেয়।
৫. এই গরমে ঘেমে গিয়ে শিশুর পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময় পর পর শিশুকে পানি খাওয়ান। অতিরিক্ত পানি খেতে ভালো না লাগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্লুকোজ বা স্যালাইন মিশিয়ে খাওয়তে পারেন।
৬. গরমে শিশুর খাবার নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে এমন খাবার শিশুকে খেতে দেবেন। খাবার পুষ্টিকর কিনা সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কখনই বাসী খাবার খাওয়াবেন না। এই অভ্যাসে শিশুর ডায়রিয়াসহ (মূত্র প্রদাহ) পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭. ফলের জুস খেতে দেবেন। বিশেষ করে মৌসুমী ফলের জুস কিংবা আস্ত ফল খাওয়াতে ভুলবেন না।
৮. শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে শুধুমাত্র সময় নিয়ে বারবার শালদুধ খাওয়াবেন।
৯. গরমে ভাজাপোড়া বা তেল মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই শ্রেয়। সহজে হজম হবে এমন শাকসব্জি, মাছ, খিঁচুড়ি বাচ্চাকে দিতে হবে। যথাসম্ভব তরল খাবারকে প্রাধান্য দেবেন।
১০. গরমে শিশুকে হালকা পাতলা সুতির কাপড় পড়ান। কারণ সুতি কাপড়ের পানি শোষণ ক্ষমতা বেশি।
১১. ঘাম শুকিয়ে গেলে শিশু দেহে ঘামাচি বেরোয়। তাই ঘাম মুছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নজর রাখতে হবে। হালকা করে পাউডার দিতে পারেন।
১২. রোদে শিশুকে খেলাধুলা করতে বারণ করবেন। রোদে লাফালাফি করার সময় ঘেমে গিয়ে শিশুর ঠাণ্ডা লাগতে পারে। তবে শারীরিক পরিশ্রম হয় না এমন খেলাধুলা যেমন দাবা, লুডু প্রভৃতিতে আপত্তি নেই।
১৩. বাড়িতে শিশুর শয্যাকক্ষ ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক রাখবেন। বাতাস যেন প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ পায়, ঘরে সেই ব্যবস্থা রাখবেন।
১৪. গরমে শিশুদের নিয়ে দূরে ভ্রমণ করবেন না। রোদের প্রখরতা ও সীমাহীন যানজটে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
১৫. অনেক সময় গরমে শিশুরা তৃষ্ণা মেটাতে রাস্তার আইসক্রিমসহ অন্যান্য পানীয় খায়। এতে বমি ও ডায়রিয়ার (মূত্র প্রদাহ) ঝুঁকি থাকে।
১৬. শিশুরা অনেক সময় গরমের কারণে অস্বস্তিতে ভোগে। যার ফলে তারা বড়দের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহার করে বসে। গরমজনিত শিশুদের এসব আচরণ বড়দের সহজভাবে নেওয়া উচিত।