চিকিৎসকদের ‘চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ’ ধর্মঘট স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১৮, ২০২৩, ১১:২০ পিএম

চিকিৎসকদের ‘চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ’ ধর্মঘট স্থগিত

ফাইল ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

ভুল চিকিৎসায় শিশু ও মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা মামলায় রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সারাদেশে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের ওই দুই চিকিৎসকের জামিন মঞ্জুর হওয়ায় চলমান ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। এর ফলে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন আবার চালুর ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব সার্জন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।

স্বাস্থ্যের এই মহাপরিচালক গণমাধ্যমকে বলেন, “সর্বশেষ খবর পেয়েছি- গ্রেপ্তার হওয়া দুই চিকিৎসকের জামিন হয়েছে। তাই আপাতত চিকিৎসকদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। ফলে আজ বিকেল থেকে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন চলবে।“

ভুল চিকিৎসায় শিশু ও মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা মামলায় রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ‘চেম্বারে রোগী দেখা ও অপারেশন করানো যাবে না’ ওই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে চিকিৎসকদের বেশ কয়েকটি সংগঠন।

তবে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা সেবা দেবেন বলে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানায়। শনিবার সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গাইনি ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ এ কর্মসূচি ঘোষণা করে।

প্রসঙ্গত,  প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাতে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। কিন্তু ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি। তিনি প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। এর ফলে  প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর মারা যায়।

স্বামী ইয়াকুব আলী সেন্ট্রাল হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে পরে তার স্ত্রীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করান। ১৮ জুন দুপুরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আঁখি।

এর আগে, নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় গত ১৪ জুন ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র একটি মামলা দায়ের করেন ইয়াকুব আলী। মামলায় ডা. শাহজাদী, ডা. মুনা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। ১৫ জুন ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা আদালতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু এবং মায়ের মৃত্যুঝুঁকির জন্য নিজেদের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

Link copied!