ডিসেম্বর ১, ২০২১, ০৬:৩২ পিএম
দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে প্রতি বছর নতুন করে ৮৬ লাখ মানুষ দারিদ্র্যতার শিকার হচ্ছেন। শুরুতেই রোগ নির্ণয় করতে না পারা, প্রয়োজনীয় ওষুধ আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার অতিরিক্ত মূল্যের কারণে দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণার প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়া ৯৭ শতাংশ রোগীই ওষুধ পান না। চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ তাদের কিনতে হয় বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে। একইভাবে ৮৫ দশমিক ১ শতাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষাই রোগীকে করতে হয় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এর ফলে বেড়ে যায় রোগীর চিকিৎসা ব্যয়।
বিশেষ করে ক্যানসার, কিডনি ডায়ালাইসিস ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় নিঃস্ব হয়ে যায় রোগী। প্রতি বছর এই চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েন ৮৬ লাখ মানুষ। একইসঙ্গে এই অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে দেশে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত থাকে ১৬ শতাংশ রোগী।
গবেষণায় দেখা যায়, তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য রোগীদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হয় বাংলাদেশেই। দেশের সরকারি হাসপাতাল থেকে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পুরোপুরি দেওয়া হয় না এবং রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে না।
আর তাই সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিয়ে থাকেন মাত্র ১৪ শতাংশ রোগী। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ৯ শতাংশ রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। তবে দেশের ৬০ শতাংশ রোগী এখন পর্যন্ত সেবা নিয়ে থাকে বিভিন্ন হাতুড়ে ডাক্তার, পল্লী চিকিৎসক, ওষুধের দোকান ও নিজেদের মতো করে ওষুধ কিনে।
এজন্য ওষুধ আর পরীক্ষা নিরীক্ষার উচ্চমূল্যকে দায়ী করে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা তহবিল গঠনের পরামর্শ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, “দেশের সব মানুষ বীমার আওতায় আসবে, এই ফান্ডটা তারা সাহায্যকারী হিসাবে কাজে লাগতে পারে। আর বীমা এগিয়ে নেওয়া খুবই জরুরি। আর সেটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করবো।”