ডেঙ্গু পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন ধরন বা ভেরিয়েন্ট বেশি ছড়াচ্ছে তা নজরদারি করতে হয়। কিন্তু ফান্ডের অভাবে এই নজরদারি বন্ধ থাকায় চিকিৎসা থেকে শুরু করে প্রাদুর্ভাব রোধে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ফান্ডের অভাবে কার্যক্রম বন্ধ
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন আছে। দেশে এ বছর কোন ধরনটির প্রাদুর্ভাব বেশি, তার কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। অর্থের অভাবে স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গু পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করতে পারছে না। স্বাস্থ্য বিভাগের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) দেশের রোগ পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেছেন, এ বছর ডেঙ্গুর কোন ধরনটির প্রাদুর্ভাব চলছে, তা তাঁদের জানা নেই। ডেঙ্গুর ওপর নজরদারি করার কার্যক্রম ‘ফান্ডের’ অভাবে বন্ধ আছে। এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি। অথচ অর্থের অভাবে আইইডিসিআরের নজরদারি কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘটনাকে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, ‘তারা (আইইডিসিআর) চাইলে আমরা ফান্ডের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতাম।
ধরন না জেনে চিকিৎসা কঠিন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও মশা গবেষক ড. কবিরুল বাশার বলেন, রোগতাত্ত্বিক ঝুঁকি বোঝার জন্য ডেঙ্গুর ধরন সম্পর্কে জানা দরকার। দ্বিতীয়ত চিকিৎসার প্রয়োজনেও ডেঙ্গুর ধরন জানা দরকার। তাই রুটিন কাজ হিসেবে এটা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
রোগতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন হলো- ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। একটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, অর্থাৎ শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠে। ওই ধরনে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। তবে অন্য তিনটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
বাড়ছে রোগীর ভর্তির সংখ্যা
গত বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ৯০ শতাংশ ছিল ডেন-৩–এ আক্রান্ত যেকারনে রোগীদের মধ্যে মৃত্যু হার কম ছিল। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ‘শক সিনড্রোম’ বেশি দেখা যাচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১১ জন। চলতি বছর এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগী। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৭০৩ জন। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ জন।