ভয়াবহভাবে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার অবস্থা মারাত্মক খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ১১টি এলাকাকে ‘রেডজোন’ ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ছয়টি এলাকা- যাত্রাবাড়ী, মুগদা, কদমতলী, জুরাইন, মানিকনগর ও সবুজবাগ এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচ উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকা- উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, তেজগাঁও ও বাড্ডা।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আগের চেয়ে পদক্ষেপ বাড়িয়েছে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনই। তবুও পরিস্থিতি এখনো বিপদজনক।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এডিস মশার প্রজনন স্থল (লার্ভা) ধ্বংস করতে চিরুনি অভিযানসহ তাদের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত মশা নিধন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
নগরীতে মশা জন্মানোর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অনেককে জরিমানাও করা হয়েছে। তবে সিটি কর্পোরেশনের সকল প্রচেষ্টাই নিছক লোক দেখানো, এমন অভিযোগ অনেকের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজধানীর ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সাধারণত কোনো এলাকার ৫ শতাংশ বাড়িতে এই লার্ভা পাওয়া গেলে ওই পরিস্থিতিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ১৮ থেকে ২৭ জুন জরিপ চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৯৮ ওয়ার্ডে চালানো এই জরিপে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক মশার প্রজননস্থল শনাক্ত, পূর্ণাঙ্গ মশা ও লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি লার্ভা পাওয়ার অর্থ ঢাকায় এবার এডিস মশাও বেশি পাওয়া যাবে।
ডেঙ্গুর প্রথম প্রকোপের বছর ২০০০ সালে সাড়ে পাঁচ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। মৃত্যু হয় ৯৩ জনের। ওই সময় মহামারী ঘোষণার দাবি জানান রোগতত্ত্ববিদরা। তবে সরকার রাজি হয়নি। এবারও পরিস্থিতি মহামারী পর্যায়ে যায়নি বলে মনে করছে সরকার।
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর প্রকৃত চিত্র কী- তা জানতে মাঠপর্যায়ে গবেষণা চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৬৮৫ জন। তার মধ্যে ঢাকায় ১৮ হাজার ৮৮৫ এবং ঢাকার বাইরে ১১ হাজার ৮০০ জন। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।