ডেঙ্গু রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস বহনকারী এডিস প্রজাতির মশা মাত্র ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় এই মশা বেশি দেখা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। ঢাকার ৯৮টি ওয়ার্ডের ১১০টি স্থানে গত ২৩ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিন ধরে প্রাক মৌসুম এ জরিপ চালানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল বলেন, “২০১৯ সালে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এবার হতে দেওয়া যাবে না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে মশার বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন,“এজন্য মশার প্রজননক্ষেত্র তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। মশা যদি ডিম না পাড়ে তাহলে ডেঙ্গু ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এমনিতেই কমে আসবে। আমরা এই জায়গায়টায় সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।”
জরিপকালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪০টি করে ৮০টি স্থানে পূর্ণাঙ্গ মশার ধরার ফাঁদ পাতা হয়। এসব ফাঁদে ২ হাজার ৮১৪টি মশা ধরা পড়ে। এরমধ্যে এডিস মশা পাওয়া যায় ১৪৩টি। যা শতকরা হিসাবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ডিএসসিসি এলাকায় ১০৬টি এবং ডিএনসিসি এলাকায় ৩৭টি এডিস মশা পাওয়া গেছে।
জরিপের তথ্য বিশ্লেশণে দেখা যায়, ডিএসসিসিতে এডিস মশার ঘনত্বের পরিমাপক ব্রুটো ইনডেক্স কিছুটা বেশি। এ করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এছাড়া ৩৮ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে এইডিস মশার ঘনত্ব ২০ শতাংশ।
সাধারণত মশার ঘনত্ব ২০ শতাংশের বেশি হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে জরিপের তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
ডিএসসিসির ২১, ১৫, ২৩ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ১০ শতাংশের বেশি এবং ৮, ১৪, ২০, ৩৫, ৪৬ ও ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে তা পাওয়া গেছে ১০ শতাংশ।
অপরদিকে ডিএনসিসির ২০, ৩২ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ সূচক পাওয়া গেছে ১০ থেকে ১৯ শতাংশের মধ্যে। এছাড়া ১০, ১৩, ১৬, ২৭, ৩০ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে যা ১০ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার উপস্থিত ছিলেন।