ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না: ডব্লিউএইচও

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৪, ২০২১, ০৯:৪০ এএম

ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না: ডব্লিউএইচও

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এর মোকবিলায় সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার আহবান  জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেন বিশ্ব স্বস্থ্য সংস্থার পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. তাকেশি কাসাই।

ডব্লিউএইচও’র এই কর্মকর্তা বলেন, “সীমান্ত বন্ধ করে ভাইরাসটির বিস্তার সাময়িকভাবে আটকানো যাবে। কিন্তু প্রতিটি দেশ এবং জাতিকে নতুন ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

করোনার নতুন এই ধরন মেোকাবিলায় বিশ্ববাসীকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “সবকিছুর মধ্যে ইতিবাচক খবর হলো- ওমিক্রন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে এই নতুন ধরন মোকাবিলায় আমাদের নতুন কিছু ভাবতে হচ্ছে না। ডেল্টা ঠেকাতে যেসব শিক্ষা আমরা পেয়েছি, নতুন এই ধরন মোকাবিলায় তা কাজে লাগাতে হবে।”

কয়েক দফা মিউটেশন হওয়ায় ওমিক্রন নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “এ ছাড়া প্রাথমিক তথ্য বলছে, এটি অন্য সব ধরন থেকে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। আমাদের বেশি বেশি পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ করা উচিত।”

এদিকে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে গুজব না ছড়িয়ে বরং এর মোকবিলায় বিশ্ববাসীর প্রস্তুতি থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সৌম স্বামীনাথন আরও বলেন, “গত বছরের তুলনায় করোনা পরিস্থিতি খুবই ভিন্ন ধরনের।”ওই সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বে এ পর্যন্ত  ৪০টি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ আফ্রিকায় সম্প্রতি শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনেকে উদ্বেগজনক বা ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। নতুন এই প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের।

প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে আরও দেখা গেছে, ওমিক্রনে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি রয়েছে। অর্থাৎ যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের সাধারণত দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবার দৃষ্টান্ত কম হলেও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ফলে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ যারা ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন তারা এখন কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, সিনোভ্যাক, স্পুটনিক ভি- এসব টিকা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর হবে? এগুলোই ওমিক্রন নিয়ে ভয়ের কারণ। বলা দরকার যে, ভাইরাস সবসময়ই পরিবর্তিত হচ্ছে, প্রতিনিয়ত মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন রূপ নিচ্ছে।

চীনের উহান শহরে প্রথম যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল, সেই ভাইরাস এখন আর নেই। ডেল্টা আর বেটা ভ্যারিয়েন্ট তাকে হটিয়ে দিয়েছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন ছিল ১০টি, আর বেটায় ৬টি। আর ওমিক্রনের ‘ইউনিক’ মিউটেশনের সংখ্যা এর অনেক বেশি- মোট ২৬টি। এতেই বোঝা যায় একে মোকাবিলা করা কত কঠিন হতে পারে।

Link copied!