কলম্বিয়ায় ভেনিজুয়েলান শরনার্থী ঢল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ২৯, ২০২১, ০১:৫৪ পিএম

কলম্বিয়ায় ভেনিজুয়েলান শরনার্থী ঢল

ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনী সীমান্তের সশস্ত্র গোষ্ঠীর  বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর বাসিন্দারা দলে দলে  কলম্বিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছে। কলম্বিয়া সরকারের মতে, গত ৭ দিনে অন্তত ৪,৭০০ ভেনিজুয়েলান কলম্বিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছে। 

আল জাজিরার সাংবাদিক আলেজান্দ্রো রাম্পেটি, কলম্বিয়ার আরাউকিতায় একটি শরনার্থী শিবির থেকে ঘুরে এসে বলেন, ‘রবিবারও ভেনিজুয়েলা সীমান্তে সংঘর্ষ চলেছে। অধিকাংশ শরনার্থী অকস্মাৎ ভেনিজুয়েলা সরকারের এই অভিযানের ফলে সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধ’

ভেনিজুয়েলার সামরিক বাহিনী গত সপ্তাহের শুরুতে কলম্বিয়ার বিচ্ছিন্ন সশস্ত্র দলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অপুর রাজ্যের লা ভিক্টোরিয়া শহরে এই অভিযান শুরু হয়।

ভেনিজুয়েলার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার (২৭ মার্চ) জানায়, হামলায় কলম্বিয়ার সশস্ত্র গ্রুপের ছয় যোদ্ধা নিহত হয়েছে, আর অভিযানে অংশ নেওয়া ৩৯ জন সেনার মধ্যে দুই সেনা হয়েছেন। তারা আরও বলেন, “ এ অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, ইউনিফর্ম, যানবাহন, মাদক এবং  প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।”

সামরিক অভিযানের কারণে ভেনিজুয়েলায়ানরা আরাউকা নদীর তীরে দেখা গেছে। সূত্র: রয়টার্স

হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ভেনিজুয়েলান নদী পার হয়ে জীবন রক্ষা করেন। অনেক শরনার্থী ভেনিজুয়েলার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাড়িঘরে লুটপাট, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অভিযোগ করেন।

শুক্রবার হোসে ক্যাস্তিলো নামক এক শরনার্থী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, গর্ভবতী স্ত্রী এবং ১২ বছর বয়সী কন্যাকে নিয়ে কলম্বিয়ায় ্এসেছেন তিনি। সেনা অভিযান সম্পর্কে হোসে বলেন, “তারা আমাদের বাড়িতে হামলা করে  সব নিয়ে গেছে। তারা দরজা ভেঙে  বাড়িতে ঢুকেছিল এবংযা কিছু ছিল সেগুলি লুট করে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়।”

তবে,এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক বার্তা সংস্থা আল-জাজিরা।

ভেনিজুয়েলার প্রধানমন্ত্রী নিকোলাস মাদুরো। ছবি: সংগৃহীত।

অন্যদিকে ভেনিজুয়েলা সরকার জানিয়েছে, দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং লোকেরা ঘরে ফিরে যেতে পারে। এছাড়াও দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা নাগরিকদের সব অভিযোগ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভেনিজুয়েলা সরকার। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অনেকেই বলেন, তারা সরকারের এই আশ্বাসে বিশ্বাস করেন না।

অন্যদিকে কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “ভেনিজুয়েলার এই বিপুল সংখ্যক শরনার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কলম্বিয়ায় ইতোমধ্যে ১৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তারা কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে  শরনার্থীদের রাখার পরিকল্পনা করেছে। যদিও তারা জানেন না যে ভেনিজুয়েলার সামরিক অভিযান কতদিন অব্যাহত থাকবে।”

তিনি আরও জানান, কলম্বিয়া সরকার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা গোষ্ঠীর কাছে শরনার্থীদের খাবার ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা।

Link copied!