প্রথমে নিজেদের আইন নিজেদের ওপরই প্রয়োগ করতে চায় তালেবান। যাতে সমাজের বাকিদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি হয়। কাবুল দখলের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকারে তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ও কেন্দ্রীয় তালেবান নেতা আবদুল কাহার বলখি আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) আব্দুল কাহার বলখি আল জাজিরাকে দেয়া এক আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতকারে তালেবানের ভবিষ্যৎ কর্মসূচী নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আশাকরি দেশ এবং দেশের বাইরে উভয় সম্প্রদায় থেকেই সহায়তা পাবো।
সরকার গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবিষয়ে এখনো আলাপ আলোচনা চলছে। তবে একটি অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন করা হবে এটি নিশ্চিত।
কাবুল বিমান বন্দরে বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে তিনি বলেন,নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে আমেরিকানদের সাথে আমাদের একটি কর্যকর সম্পর্ক আছে। তাদের সাথে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের চেকপোস্টগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং ভেতরের চেকপোস্টগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
সাধারণ জণগন এবং তালেবানদের মধ্যে আস্থার সংকট নিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে বলখি বলেন,আমরা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও সাধারণ জণগণের তড়িঘড়ি করে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে বিমানবন্দরের দিকে ছুটোছুটি করাটা খুবই হতাশাজনক। তবুও কেন সবার মধ্যে এই ভয় কেন এই আতঙ্ক তা আমরা এখনো জানিনা।
আমাদের কাবুলে প্রবেশ করাটা পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো না। প্রথম দিকে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধান পাওয়ার আগে আমরা কাবুলে প্রবেশ করতে চাইনা। আমরা চেয়েছিলাম একটি অর্ন্তভূক্তি ও অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যা ঘটেছে তা হলো, আমেরিকান বাহিনী অতিদ্রুত চলে যাওয়ার ফলে তাদের শূন্য স্থান পুরণ করতে বলা হয় আমাদের। তাই আমার কাবুলে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছি।
তালেবান সরকার নারীদের কিভাবে দেখবে সে প্রসঙ্গে বলখি বলেন, আমরা ইসলামি শরিয়া আইন অনুসরণ করবো আর ইসলামি শরিয়ায় কোন দ্ব্যর্থতা নেই। সেখানে নারী-পুরুষ-শিশু সবার অধিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। তবে আমরা সবদিক বিবেচনা করে সবার সাথে পরামর্শ করেই নারী অধিকারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।
বিভিন্নজনকে টার্গেট করে হত্যা এবং আফগান সিভিল সোসাইটির সদস্যদের হয়রানির ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, প্রথমে আমরা নিজেদের ওপর আইন প্রয়োগ করতে চাই। যাতে সমাজের বাকিদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি হয়। সুতরাং আমাদের কেউ যদি কোনো ধরনের অন্যায়ের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের প্রথমে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
তালেবানদের সন্ত্রাসবাদী তকমা দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মনে করি সাধারণ মানুষ আমাদের সন্ত্রাসবাদী ভাবে না। ‘সন্ত্রাসবাদী’ এবং ‘ওয়ার অন টেরর’ এগুলো আমেরিকার ফায়দা হাসিলের জন্য নির্মিত শব্দ।