সুপার টাইফুন রাইয়ের আঘাতে ফিলিপাইনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৫-এ। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৫০০ জন। নিখোঁজ থাকা ৫৬ জনের সন্ধানে অভিযান চলছে। বিপর্যস্ত এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কয়েক হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেসব এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব জায়গায় সেনাবাহিনীর বিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজযোগে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) টাইফুনটি ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে আঘাত হানে। তার আগেই বহু মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। টাইফুনের পর বহু মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিপর্যস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। দেশটির প্রশাসন আশ্রয়হীন ও বিপর্যস্ত মানুষের কাছে সুপেয় পানীয় এবং খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ আরও জোরদার করেছে।
এদিকে, সুপার টাইফুন রইয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে অনেক বাড়িঘর এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভবনের পাশাপাশি রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে । এছাড়াও বেশ কয়েকটি এলাকায় ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। সুপার টাইফুন রাইয়ের আঘাতে দেশটির বিপর্যস্ত মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে তীব্র খাদ্য ও পানি সংকট। দেখা দিয়েছে।
ফিলিপাইন রেড ক্রসের প্রধান রিচার্ড গর্ডনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ‘অনেক এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যোগাযোগব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে, ফুরিয়ে এসেছে খাবার পানিও। কিছু এলাকায় মনে হচ্ছে, বোমা ফেলে সব লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে, অবস্থা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে ভয়াবহ।’
প্রসঙ্গত, রাই চলতি বছর ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানা ১৫তম টাইফুন এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী ক্রান্তীয় ঝড়গুলোর একটি। ভয়ংকর এই ঝড়টি দেশটির নয়টি দ্বীপে তাণ্ডব চালিয়েছে। সেবু, লেইতে, সুরিগাও দেল নর্তে, সিয়ারগাও ও দিনাগাত প্রদেশে ব্যাপক ধ্বংসের একটি পথরেখা রচনা করে এগিয়ে গেছে রাই।
এর আগে, ২০১৩ সালে দুর্যোগপ্রবণ এই দেশটিতে টাইফুন হাইয়ান তাণ্ডবে ৬ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানী ঘটে। ওই টাইফুনের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও লাখ লাখ মানুষ।