জুন ১৩, ২০২২, ০৩:৫২ পিএম
খুব শিগগিরিই বিশ্বে পরমানু অস্ত্রের মজুদ বাড়ছে বলে জানিয়েছে সুইডেনের একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা। সোমবার (১৩ জুন) স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্স (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ আগের কয়েকটি যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের প্রতিটি পরমানু অস্ত্রধর দেশই পরমানু অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে রাশিয়ার পরমানু অস্ত্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৯শ ৭৭টি। যুক্তরাষ্ট্রের এ সংখ্যা ৫ হাজার ৪শ ২৮টি। এ হিসেবে বিশ্বের মোট পরমানু অস্ত্রের ৯০ শতাংশই এই দুটি দেশের দখলে রয়েছে। সংস্থাটি বলছে, মূলত এ দেশগুলোকে পরমানু অস্ত্রের যে মজুদ ছিলো, সেখান থেকে কিছু পরমানু অস্ত্র কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় বাতিল হয়ে গেছে। যার কারণে পরমানু অস্ত্রের সংখ্যা কমেছে। তবে যেগুলো ব্যবহারযোগ্য, সেই পরমানু অস্ত্রের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে। ১৯৮০ সালে শীতল যুদ্ধের সময় বিশ্বে যে পরিমাণ পরমানু অস্ত্র ছিলো বর্তমানের সংখ্যা সেই তুলনায় ৫ ভাগের ১ ভাগেরও কম। তখন সারাবিশ্বে পরমানু অস্ত্রের এ সংখ্যা ছিলো ৫৪ হাজার ৪শ ৯টি। বর্তমানে সারাবিশ্বে ১২ হাজার ৭শ ৫টি পরমানু অস্ত্র রয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, অচিরেই পরমানু অস্ত্রের এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে। যে অস্ত্রগুলো হবে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী। চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র-বিশ্বের এই ৫টি পরমানু শক্তিধর দেশ চাইছে; বিশ্বে নতুন করে পরমানু অস্ত্রের সংখ্যা না বাড়ুক। তবে বিশ্বের এই ৫টি পরমানু শক্তিধর দেশ পরমানু অস্ত্র বিস্তারের বিপক্ষে বক্তব্য দিলেও নিজেরাই তাদের পরমানু অস্ত্রের বিস্তার বন্ধ করেনি। এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে সম্প্রতি ইউক্রেনে পরমানু হামলার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
অন্যান্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখন পরমানু অস্ত্রের ব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি বলে হুশিয়ারী দিয়েছে সুইডিস এ সংস্থাটির পরিচালক ড্যান স্মিথ। ভারত, ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া এবং পাকিস্তান-অন্যান্য এসব পরমানু শক্তিধর দেশও সম্প্রতি তাদের পরমানু অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে এসআইপিআরআই। যদিও ইসরায়েল এখনও জনসমুখে পরমানু অস্ত্র থাকার বিষয়টি স্বীকার করেনি। নতুন করে ৩শ টি পারমানবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইল তৈরিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছে নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন। গত বছর পরমানু অস্ত্র বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এসআইপিআরআই এর গণবিধ্বংসী অস্ত্র শাখার পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান বলেছেন, পরমানু অস্ত্র বাড়ানোর এ খবর প্রতিটি দেশের জন্যই উদ্বেগের। সংস্থাটির এ তথ্যগুলো চলতি বছরের জানুয়ারির মাসে আপডেট করা। ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বৈরি সম্পর্ক, চীন-ভারত সীমান্তে চীনের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর শত্রুভাবাপন্ন আচরণ এবং উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক অস্ত্রবহনে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় মিসাইলের সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলো ক্রমেই পরিস্থিতি ভয়ানক দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, পরমানু যুদ্ধে কোন পক্ষেরই জয় হয় না। কোনভাবেই পরমানু যুদ্ধে জড়ানো যাবে না।