“আমরা নিশ্চিত মৃত্যু থেকে মাত্র কয়েক মিনিট দূরে আছি”

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নভেম্বর ১১, ২০২৩, ০২:৩৭ পিএম

“আমরা নিশ্চিত মৃত্যু থেকে মাত্র কয়েক মিনিট দূরে আছি”

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলার পর সেখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছে। হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর ) উত্তর গাজার আল-শিফা হাসপাতালে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে হামলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজও হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

জ্বালানিসংকটের কারণে হাসপাতালটিতে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতালটির পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত মৃত্যু থেকে মাত্র কয়েক মিনিট দূরে আছি।’

আবু সালমিয়া আরও বলেন, হাসপাতালের ভবনগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। কোনো ব্যক্তি হাসপাতাল চত্বরে বের হলেই ইসরায়েলি সেনাদের হামলার শিকার হচ্ছেন।

হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের মেডিকেলের এক সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত হওয়ার আগে তিনি হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদের সাহায্যে ইনকিউবেটরে কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। তখন তাকে গুলি করা হয়েছে। 

ইসরায়েলি স্নাইপার বন্দুকের গুলিতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, পানি নেই। কেউ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমরা পুরো পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছি। আমরা সারা বিশ্বে অনেক বার্তা পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। আমরা কিছু লোককে শিফা থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এ জায়গা থাকার জন্য এখন আর নিরাপদ নয়। আমাদের কিছু কর্মী হাসপাতালে আছেন। তারা তাদের চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেবা-সহায়তার জন্য।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস সামে একটি সংগঠনের হয়ে কাজ করেন শিশু চিকিৎসক তানিয়া হজ হাসান। লন্ডন থেকে তিনি গাজার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে চাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আমি আসলে কোনো কথা ভাবতে পারছি না। আমার কাছে শব্দ বা বাক্য নেই। 

কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেছে আমরা মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেই যাচ্ছি। প্রতিদিন আমরা এ পরিস্থিতি নিরসনে ফোন কল করছি। আমরা এ ব্যাপারে আরও বেশি মরিয়া। আমরা কি আদৌ এই পৃথিবীতে আমরা বাস করছি?

গাজার উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসেফ আবু আল-রিশ আল শিফা হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, জ্বালানির অভাবে সব জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া হাসপাতালে বিদ্যুতের সব উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। ইনকিউবেটরে ৩৯ নবজাতক রয়েছে। তারা সবাই মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।

রামাল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে। ‘অনিবার্য মৃত্যু’ গাজার হাসপাতালে থাকা রোগীদের ভাগ্যে পরিণত হয়েছে। আমরা এ জন্য ইসরাইল, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ী করি।

Link copied!