৬ দেশকে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ; নেই বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগস্ট ২৪, ২০২৩, ০২:০৭ পিএম

৬ দেশকে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ; নেই বাংলাদেশ

সংগৃহীত ছবি

বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিকস সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল ‘কোন কোন দেশ পেতে যাচ্ছে ব্রিকসের সদস্যপদ’। বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশ ব্রিকসের সদস্য হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। অবশেষে হলো অপেক্ষার সমাপ্তি।

আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, ইরান ও ইথিওপিয়াকে জোটের সদস্যভুক্ত হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ব্রিকস।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানান ব্রিকসের বর্তমান চেয়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।

আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ ছয়টি দেশের সদস্যপদ কার্যকর হবে বলে জানান দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। 

বিশ্বজুড়ে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়ছে অনেক দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়। ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ‘ডি-ডলারাইজেশন’ প্রক্রিয়ার দিকে ঝুঁকছে অনেক দেশ। আর এ কারণেই ব্রিকসে যুক্ত হতে আগ্রহ বাড়ছে।

বিশ্বের অর্থনীতিতে ব্রিকসের সম্প্রসারণ কীরূপ প্রভাব ফেলবে এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির রাইজিং পাওয়ার অ্যালায়েন্স প্রজেক্টের জ্যেষ্ঠ ফেলো মিহায়েলা পাপা বলেন, ‘জোটের সম্প্রসারণ অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা। কেউ কেউ আছেন যারা ব্রিকসে সহজে ভিড়তে চায়। সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে জোটের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করা।’

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক আন্দ্রে স্পারটাকের মতে, ‘বিশ্ব উন্নয়ন নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে ব্রিকসের। এর সদস্য দেশগুলো ক্রমবর্ধমান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নানা সংস্কার ও পরিবর্তনের জন্যও প্রস্তুত জোটটি। এতে আমার মনে হয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে পারে।’

চীনের সম্প্রসারণ প্রস্তাবের পক্ষে ওয়াশিংটনে স্টিমসন সেন্টার থিংক ট্যাঙ্কের চায়না প্রোগ্রামের পরিচালক ইউন সান বলেন, জোট যত বড়, তারা তত বেশি শক্তিশালী একটি সমষ্টিগত জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবে। পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীন উন্নয়নশীল বিশ্বের নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্ব করবে।

২০০১ সালে গোল্ডম্যান শ্যাক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ জিম ও’নিল একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছিলেন। সেখানে তিনি ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীনের একটি জোট হওয়ার আভাস দিয়েছিলেন। আর এটি তৈরি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার উদ্যোগে।

পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীন মিলে গঠিত হয় ‘ব্রিক (BRIC)’ নামে একটি অনানুষ্ঠানিক জোট। পরের বছর সে জোটে অন্তর্ভুক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন ‘ব্রিক’ নাম বদলে হয়ে যায় ‘ব্রিকস (BRICS)’। সময়ের সাথে সাথে এই অর্থনৈতিক জোটটি পশ্চিমা উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আখ্যায়িত হতে থাকে।

সব সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ভূ-রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বহুপাক্ষিক বাণিজ্য এবং উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে থাকে ব্রিকস। 

Link copied!