অক্টোবর ১, ২০২৩, ০৮:৪২ পিএম
পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার মধ্যরাতের আগে পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওঠানামা ও বিনিময় হার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ভোক্তা পর্যায়ে পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
নতুন মূল্য নির্ধারণের ফলে ডিপোতে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম হবে ৩২৩ রুপি। অন্যদিকে, ডিজেলের দাম পড়বে ৩১৮ রুপি। খুচরা পর্যায়ে দাম কিছুটা বেশি পড়বে বলে জানায় ডন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনওয়ারুল হক কাকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম দেশটিতে এই দুই ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলো। এর ফলে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম কমবে ৮ রুপি ও ডিজেলের ১১ রুপি। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই দাম কার্যকর থাকবে।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডনের খবরে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর এখন দাম কমানো হলো। তখন লিটারপ্রতি পেট্রলের দাম বেড়েছিল ৫৯ রুপি ও ডিজেলের ৫৬ রুপি।
পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমলেও পাকিস্তানে অবশ্য তরল গ্যাস বা এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছে। এবারে দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ। এর ফলে বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়, এমন ১১ দশমিক ৮ কেজির একটি সিলিন্ডারের দাম বাড়বে ২৪৬ রুপি। গত মাসেই এলপিজির দাম ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। নতুন মূল্য নির্ধারণের ফলে এক সিলিন্ডার গ্যাসের দাম হবে ৩ হাজার ৮০ রুপি।
ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রা রুপির বিনিময় হার পরিস্থিতি সেপ্টেম্বর মাসে বেশ খানিকটা ভালো হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কালোবাজারে বিদেশি মুদ্রার অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার পর সেপ্টেম্বর মাসে ডলারের বিপরীতে রুপির দাম ৬ দশমিক ১ শতাংশ বাড়ে।
ফলে আগস্ট মাসে রুপির দাম যতটা কমেছিল, সেই ঘাটতি পূরণ হয়। রয়টার্স বলছে, রুপির দাম বাড়ার কারণে সেপ্টেম্বর মাসে কার্যত পাকিস্তানি রুপি বিশ্বের সবচেয়ে ভালো করা মুদ্রার তালিকার শীর্ষে ছিল। গত ৫ সেপ্টেম্বর রুপির দাম রেকর্ড পরিমাণ নেমে যায়। সেদিন প্রতি ডলারের দাম ছিল ৩০৭ রুপি। কিন্তু তার পরেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।
পরের দিন থেকে কালোবাজারে ডলার বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান শুরু করে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ। দেশটির আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী এই অভিযান চালায়। ফলে অনানুষ্ঠানিক মুদ্রাবাজার থেকে লাখ লাখ ডলার আনুষ্ঠানিক মুদ্রা বাজার ও ব্যাংকে ফিরে যায়। এর পর থেকেই রুপির আবার চাঙা হতে শুরু করে।বৃহস্পতিবার প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ২৮৭ দশমিক ৮ রুপিতে।
খেলাপি হওয়া থেকে বাঁচতে গত জুলাই মাসে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের একটি ঋণ নেয়। এই ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল, দেশটিতে মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাকে বাজার ভিত্তিক করতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল ৭৬৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থ দিয়ে দেশটির দুই মাসের আমদানি খরচও মেটানো যাবে না। এ ছাড়া, মূল্যস্ফীতি আগামী দিনগুলোয় বেশি থাকবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার ২৯ থেকে ৩১ শতাংশের মধ্যে বহাল থাকতে পারে বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।