আগস্ট ৯, ২০২৩, ০৫:৪৫ পিএম
মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্য এবং মোদি সরকারের ওপর আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের লোকসভা।
স্থানীয় সময় বুধবার বিরোধীদলের নেতা রাহুল গান্ধী মণিপুর রাজ্যে সহিংসতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার প্রতি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার পর দেওয়া প্রথম বক্তব্যে বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির এই নেতা।
বক্তব্যের শুরুতে বিরোধী দলের নেতা রাহুল বলেন, “ভারত হলো একটি কণ্ঠস্বর, হৃদয়ের কণ্ঠস্বর। আপনারা মণিপুরের কণ্ঠস্বরকে হত্যা করেছেন। মণিপুরে ভারত মাতাকে হত্যা করেছেন। আপনারা দেশদ্রোহী। আমার মা এখানে বসে আছে। অন্য মা, ভারত মাতাকে মণিপুরে হত্যা করেছেন। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাননি। আপনারা ভারত মাতার রক্ষক নন, হত্যাকারী।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাননি কারণ তিনি এটিকে ভারতের অংশ মনে করেন না। বিজেপি মণিপুরকে বিভক্ত করে ফেলেছে।”
রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেন, “ কেন্দ্র সরকার চাইলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে মণিপুরের দাঙ্গা বন্ধ করতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি। ভারতের সেনাবাহিনী ১ দিনের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে, কিন্তু আপনারা একে ব্যবহার করছেন না।”
হরিয়ানার হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রতিক দাঙ্গায় বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে রাহুল গান্ধী বলেন, “আপনারা সব জায়গায় কেরোসিন ছিটিয়েছেন, মণিপুরে আপনারা আগুন জ্বালিয়েছেন, এখন হরিয়ানাতেও একই কাজ করার চেষ্টা করছেন।”
রাহুল গান্তীর এমন মন্তব্যে র পরই লোকসভার ভেতরে হৈচৈ শুরু হয়। বিজেপি নেতারা তাকে ক্ষমা চাইতে বলেন।
প্রসঙ্গত, মোদি পদবি মামলায় গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সাজা স্থগিত হওয়ার পর লোকসভার হারানো সদস্যপদও ফিরে পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। গত সোমবার সকালে স্পিকারের সচিবালয় থেকে এ–সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়। সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার পর বুধবার সংসদে যেয়ে কথা বলেন কংগ্রেস পার্টির এই সংসদ সদস্য। লোকসভার বর্ষাকালীন এই অধিবেশন মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উত্তাল। বেশ কয়েক মাস ধরে চলমান মণিপুরের সহিংসতা নিরসনে মোদি প্রশাসন সফল না হওয়ায় বিরোধী দলের সদস্যরা নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কের অংশ হিসেবে রাহুল গান্ধী বুধবার লোকসভায় বক্তব্য দেন। আর তার বক্তব্যে লোকসভা উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় তুমুল তুমুল হই চই।